বরগুনায় ট্রাফিক পুলিশ মামলা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন চালক নিজেই। পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে পুলিশ সুপারের নিকট ক্ষমা চাইলে, তাকে ক্ষমা করে তার নিজ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৬ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বরগুনা পৌরশহরের জিরো পয়েন্ট এলাকার ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে।
বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন বরগুনা পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম খলিল।
মোটরসাইকেলে আগুন জ্বালানো ওই চালকের নাম নজরুল ইসলাম। তিনি পৌরশহরের উকিলপট্টি এলাকার বাসিন্দা এবং বরগুনা-পুরাকাটা রুটে মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নজরুল মোটরসাইকেল নিয়ে জিরো পয়েন্ট থেকে পুলিশ বক্সের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বক্সের সামনে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জন শাহাবুদ্দিন তাকে থামিয়ে গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। এ সময় গাড়ির কাগজ সঙ্গে নেই ও তার স্ত্রী ডেঙ্গু আক্রান্ত বলে জানান নজরুল। বাসা কাছাকাছি হওয়ায় গাড়ির কাগজপত্র বাসা থেকে নিয়ে দেখালেও নজরুলের সঙ্গে হেলমেট না থাকার অপরাধে একটি মামলা দেন ওই ট্রাফিক সার্জন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হঠাৎ নিজের গাড়ির তেল ছেড়ে দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন নজরুল। পরে উপস্থিত লোকজন পার্শ্ববর্তী দোকান থেকে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ মোটরসাইকেলটি বরগুনা থানায় নেওয়া হয়েছে এবং চালক নজরুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ সুপারের কাছে নেওয়া হয়।
কর্তব্যরত সার্জেন্ট শাহাবুদ্দিন বলেন, আমি মাছবাজারের সামনে দায়িত্বরত ছিলাম। তখন হেলমেট ছাড়া যেতে দেখে ইশারা দেই। কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কাগজ আনতে সুযোগ চান। পরে তার নাম-ঠিকানা রেখে কাগজ আনার সুযোগ দেওয়া হয়। কাগজপত্র নিয়ে এলে তাকে কাগজের কোনো মামলা দেওয়া হয়নি। কিন্তু হেলমেটের জন্য তাকে মামলা দেওয়া হয়। এতে রাগে ও ক্ষোভে তিনি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ খবর শুনে তার স্ত্রী চলে আসেন।
এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম খলিল কালবেলাকে বলেন, তার স্ত্রী অসুস্থ এবং তিনি একজন রেন্ট-এ-কার চালক ও নিজের কর্মের জন্য অনুতপ্ত। তাই আমরা তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো আইনগত প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি না। তিনি আমার বরাবর ভুল স্বীকার করে আবেদন করেছেন। মুচলেকা নিয়ে তাকে তার ওয়ার্ডের কমিশনারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তার মোটরসাইকেলের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।
মন্তব্য করুন