আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হতে পারে, অন্তর্বর্তী সরকার এমন ইঙ্গিত দেওয়ার পর থেকেই সারা দেশের মতো সিলেটেও শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রস্তুতি। সবার আগে সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসনে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন সাবেক সিসিক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর কথা জানান।
সম্প্রতি সিলেট সফরে এসে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় নেতাকর্মীদের নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশনার পর সিলেটের রাজনীতিতে নতুন করে গতি ফিরেছে। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে আগ্রহী দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির আনুষ্ঠানিকভাবে না করলেও মাঠে এরই মধ্যে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্যে প্রচারণা শুরু করলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক দুবারের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এ নিয়ে ভিআইপি আসনটিতে উভয়েই মাঠে নামায় নিজেদের মধ্যকার ঠান্ডা লড়াই এবার অনেকটা প্রকাশ্যে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তা ছাড়া দলের কেন্দ্রীয় দুই হ্যাভিওয়েট নেতাকে নির্বাচনী মাঠে মনোনয়ন দৌড়ে পাওয়া যাবে, এমন খবরে সিলেটের তৃণমূল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
ধানের শীষে মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবে আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সিলেট-১ আসনে চাই। তিনি যদি এ আসন থেকে নির্বাচন করেন, তবে সিলেটবাসী অত্যন্ত আনন্দিত হবেন এবং সিলেটের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবে। আর যদি কোনো কারণে তিনি এখানে না আসতে চান, তবে সেখানে আমি নির্বাচন করব।’
তিনি বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সিলেটের সর্বস্তরের মানুষের কাছে দোয়া চেয়ে-সবার ইজাজত নিয়ে আজ (গতকাল) জুমার নামাজ পড়ে এখান থেকে আমার আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করলাম।’
খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘এ মসজিদে (বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় মসজিদ) আসার ও নামাজ পড়ার কারণ হচ্ছে, সিলেটের বেশিরভাগ মুরুব্বি এখানে এসে নামাজ আদায় করেন। এ ছাড়া আমাদের নেতা মরহুম এম সাইফুর রহমান মৃত্যুর আগের দিনও এ মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন। সব মিলিয়ে এখান থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করলাম।’
একটা সময় সিলেট বিএনপিতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল প্রয়াত অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের। পরে তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিএনপির ‘নিখোঁজ’ নেতা এম ইলিয়াস আলী আলাদা বলয় তৈরি করেন। সাইফুর রহমানের মৃত্যু ও ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর বিএনপিতে নতুন মেরুকরণ হয়। এখন মুক্তাদির ও আরিফুলে নেতাকর্মীরা বিভক্ত। তবে এখানে নানা দল-উপদল থাকলেও সেগুলো আবার মুক্তাদির-আরিফুল বলয়ে সম্পৃক্ত।
রাজনীতিতে আধিপত্যের পাল্লাও সমানে-সমান। মুক্তাদির-আরিফুল প্রকাশ্যে বিভেদ না দেখালেও আড়ালে একে অন্যকে ‘কাবু’ করায় ব্যস্ত থাকেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। বিশেষত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্থানীয় ক্ষমতার বলয় নিয়ন্ত্রণে নিতে উভয়েই এখন তৎপর।
মন্তব্য করুন