মাসুদ রানা, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ফলের বাজারে আগুন, দাম শুনেই ফিরে যাচ্ছেন অনেকে

খানসামা বাজারে ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতা রফিকুল। ছবি : কালবেলা
খানসামা বাজারে ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতা রফিকুল। ছবি : কালবেলা

চিনি, ডিম ও কাঁচামরিচের দাম বাড়ার পর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম একে একে বাড়তে শুরু করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বেড়েছে দেশি ও বিদেশি ফলের দাম। দিনাজপুরের খানসামায় ফলের বাজাগুলোতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। আগে পরিবারের জন্য যারা নিয়মিত ফল কিনতেন, তারা বাজারের তালিকা থেকে পুষ্টিকর এ পণ্যগুলো বাদ দিচ্ছেন। এ ছাড়া খুব প্রয়োজনে খরচ সমন্বয় করতে একটি-দুটি করে ফল ওজন দিয়ে কিনছেন। দেশীয় ফলেও নেই স্বস্তি। মোটকথা মধ্যবিত্ত এবং গরিবের যেন ফল ধরতেই মানা।

অনেকেই খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন, আবার অনেকেই প্রয়োজনে সীমিত পরিমাণে কিনে খাচ্ছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনো ব্যক্তি যদি রোগী দেখতে যান তারাই সাধারণত কিনছেন। এ ছাড়াও কোনো আত্মীয়স্বজনের বাড়ি গেলে এ ফল কিনছেন। ছোট-বড় ফলের দোকানে ভালো মানের বিদেশি ফল ৩০০ টাকার নিচে মিলছে না। দামের আধিক্যতার কারণে অনেক ক্রেতাই বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরা দাম শুনেই ফলের দোকানের সামনে থেকেই ঘুরে চলে যাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে উপজেলার খানসামা বাজার ও পাকেরহাট ফলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি আপেল ও কমলা বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা, প্রতি কেজি সাদা আঙুর ৪০০ ও লালচে আঙুর ৪৬০, ড্রাগন ২৮০-৩৫০ টাকা, বেদনা ৪০০ টাকা, সেহরি ফল ৪৬০-৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাল্টার কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, আম প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১২০-২০০ টাকা, পেয়ারা ৭০-৮০ টাকা,আমড়া ৪০-৫০ টাকা, নারিকেল প্রতি পিস ১০০ টাকা, বড় আনারস ১৫০-১৮০ টাকা জোড়া, ছোট আনারস ১০০ টাকা জোড়া হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। একই চিত্র অনান্য ফলের বাজারগুলোতে দেখা যায়।

অনেকেই ব্যক্ত করছেন মনের কথা। তারা বলেন, অসহনীয় দামের কারণে এখন আর ফল কেনা হয় না। নিত্যপণ্যসহ সংসারের অন্যান্য খরচ বেড়েছে। তাই খুব দরকারে একটি-দুটি করে ফল নিয়ে ওজন মেপে যে টাকা হয় সেভাবে ফল কিনতে হচ্ছে। আপেল কমলা কেনা বাদ দিয়েছি অনেকদিন আগেই। এত টাকা দিয়ে ফল কিনে খাওয়া আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মানুষজনের এখন বিলাসিতা। ফলের বাড়তি দামের কারণে একান্ত প্রয়োজন বা অতিথি আপ্যায়ন ছাড়া ফল কেনা হয় না। বাচ্চারা খেতে চাইলে দুইটা-তিনটা করে কিনে নিয়ে যাই।

ফলের দোকানে ক্রেতা আসছেন, তবে কিনছেন না অনেকেই, আবার কেউ কেউ দরদাম করছেন, আর কেউ কেউ দাম শুনে কিছু না বলে চলে যাচ্ছেন।

খানসামা বাজারে ফলের দোকানে ঘুর ঘুর করছেন আলম নামে ব্যক্তি, তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘যে ফলের দাম। দাম করতেই ভয় পাচ্ছি। আমরা গরিব মানুষ ফল খাওয়া এখন বিলাসিতা। তারপরও রোগী দেখতে যাব, না কিনে উপায় নেই।’

পাকেরহাট বাজারে ফল কিনতে আসা মোরসালিন বলেন, ‘আমার ভাতিজি অসুস্থ। তার জন্য কিছু ফল কিনতে আসছিলাম কিন্ত ফলের বাজার যে এত চড়া বেশি কিনতে পারলাম না তাই ১৩০ টাকায় ৫০০ গ্রাম আপেল ও ৩৫ টাকায় ১০০ গ্রাম সবুজ আঙুর ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছি।’

খানসামা বাজারের ফল বিক্রেতা আবু সায়েম বলেন, ‘ভাই বর্তমানে অনেক দাম কিনতে হয়, তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করছি। আমরা সামান্য মুনাফায় ফল বিক্রি করি কেননা, এগুলো পচনশীল পণ্য। একই কথা জানান আরেক ফল বিক্রেতা রফিকুল।’

পাকেরহাট বাজারের ফল বিক্রেতা শাহীন জানান, পাইকারি বাজার থেকে আমরা যে দরে ফল আনি, কিছু লাভে তা বিক্রি করি। এর আগে ফলের দাম আরও বেশি ছিল। এখন তো কমে গিয়েছে, আর এগুলো কাঁচামালের মতোই কখনো দাম বেশি আবার কখনো দাম কম। এই সপ্তাহে শুধু কমলার দাম বেড়ে গেছে আর অন্যান্য ফলের দাম কমেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৬ দফা দাবি আদায়ে ঢাকায় জুলাই ঐক্যের প্রতীকী কফিন ও মশাল মিছিল

দেশ সেরা ১০ ব্যাংক ও ২ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

গোপালগঞ্জের ঘটনায় ফেসবুকে ‘উপহাস’, এএসপি প্রত্যাহার

‘গোপালগঞ্জ থেকে এপিসিতে ওঠানোর দায় আমিসহ কয়েকজনের’

আইডিয়াল স্কুলে গোপালগঞ্জের শিক্ষক বরখাস্ত

রিউমর স্ক্যানার / পুরোনো ভিডিওকে গোপালগঞ্জের বলে প্রচার করলেন জয়

এনসিপির সমাবেশে হামলার নিন্দা / দুষ্কৃতিকারীরা দেশকে আবারও অস্থিতিশীল করতে চায় : সমমনা জোট

গোপালগঞ্জে এনসিপির ওপর হামলায় হেফাজতের বিবৃতি

একযোগে গণঅধিকার পরিষদের ১২ নেতার পদত্যাগ

‘একাত্তরের পরাজিত শক্তির ওপর ভর করে ভুল পথে হাঁটছেন’

১০

ফ্যাসিবাদ রুখতে সরকারকে কঠোর হতে হবে: ইউট্যাব

১১

সাতক্ষীরায় ‘জুলাই শহীদ দিবস’ কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ পাননি সংগঠকরা

১২

মাছের প্রজেক্টে দফায় দফায় হামলা, ৫ কোটি টাকা ক্ষতি দাবি

১৩

এখনই ঘরে ফেরা হচ্ছে না বার্সার

১৪

সারা দেশে জামায়াতের কর্মসূচি ঘোষণা

১৫

জুলাই শহীদ দিবসে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের বিশেষ প্রার্থনা সভা

১৬

রাজবাড়ীতে একই দিনে দুই দলের কর্মসূচি, অস্থিরতার শঙ্কা

১৭

একটি গোষ্ঠী ধারাবাহিকভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে : টিটু

১৮

রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী কোন খাবার খাবেন, দেখে নিন

১৯

সিরিজ জয়ের পর যা বললেন লিটন

২০
X