রাজধানীর স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংলিশ ভার্সনের প্রভাতি শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক রোকুনুজ্জামান শেখকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই শিক্ষকের বাড়ি গোপালগঞ্জ।
বুধবার (১৬ জুলাই) আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফেরদাউস স্বাক্ষরিত চিঠিতে রোকুনুজ্জামান শেখের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই শিক্ষক বিগত সরকারের সময় গোপালগঞ্জের প্রভাব বিস্তার ছাড়া নিয়োগের জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া অভিযোগ উঠেছে। বিতর্কিত সাবেক গভনিং বডির সভাপতি ও সাবেক সচিব আবু হেনা মো্শেদ জামানের সাথে তার সখ্যতা ছিল ।
তাকে অভিযোগগুলো জন্য স্বাক্ষর ও তারিখ জালিয়াতি করে এমপিওভুক্ত হওয়া, স্কুলে ফরওয়ার্ডিং লেটারে স্বাক্ষর পরিবর্তন: মাউশি বরাবর প্রেরিত ফরওয়ার্ডিং লেটারে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ এমাম হোসাইনের পরিবর্তে মো. মিজানুর রহমানের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। জন্মতারিখ ও যোগদানের তারিখ পরিবর্তন: এমপিওভুক্তির কাগজপত্রে রোকুনুজ্জামান শেখের জন্মতারিখ ১৫/০৫/১৯৬৯ দেখানো হয়েছে, যা প্রকৃত জন্মতারিখ ২০/১০/১৯৮২ থেকে ভিন্ন। এছাড়াও সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠানে যোগদানের তারিখ ১০/১০/২০০০ দেখানো হয়েছে, যখন তিনি প্রকৃতপক্ষে ১৫/০৯/২০১১ তারিখে যোগদান করেন। একইভাবে, সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের তারিখ ০১/১০/২০০০ দেখানো হয়েছে, যেখানে প্রকৃত যোগদানের তারিখ ০১/০৩/২০২৩।
এছাড়াও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৪টি সৃষ্ট পদের কথা উল্লেখ থাকলেও, রোকুনুজ্জামান শেখ প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির শিক্ষক প্রতিনিধি হওয়ায় নিজ ক্ষমতাবলে নিজের নিয়োগপত্রে ‘শূন্যপদ’ উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও, জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ রেজুলেশনে ৪টি সৃষ্ট পদের পরিবর্তে ২টি সৃষ্ট পদ ও ২টি শূন্যপদ দেখানো হয়েছে।
স্কুল থেকে বহিস্কারের চিঠিতে বলা হয়েছে, এসব অভিযোগ প্রতারণা ও জালিয়াতির সামিল। কেন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১৬ জুলাই কে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বাসস্থান পরিবর্তন করতে পারবেন না এবং বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
এ বিষয়ে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফেরদাউস সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্যদিকে, সহকারী প্রধান শিক্ষক রোকুনুজ্জামান শেখ মঙ্গলবার জানান, তিনি এমপিওভুক্তির কোনো আবেদন করেননি এবং কারণ দর্শানোর জবাব দেবেন। তিনি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন।
মন্তব্য করুন