মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

গুলিবিদ্ধ ইমরান ফিরে পাননি স্মৃতি, বাবা চাইলেন সুচিকিৎসা

জুলাই যোদ্ধা মো. ইমরান। ছবি : কালবেলা
জুলাই যোদ্ধা মো. ইমরান। ছবি : কালবেলা

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে বাড়ি ফিরলেও সম্পূর্ণ স্মৃতি ফিরে পাননি মো. ইমরান (২২)। এখনো শুকায়নি ইমরানের মাথায় গুলির ক্ষতচিহ্ন। ফিরতে পারেননি স্বাভাবিক জীবনে।

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের মধ্য তারতাপাড়া গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে মো. ইমরান। ইমরান এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ইমরানের পরিবারে মা-বাবা, দুই ভাই-বোন ও বৃদ্ধা দাদি রয়েছে। ইমরান তার ভাই-বোনদের মধ্যে বড়। তার বাবা বিল্লাল পেশায় রিকশাচালক। ইমরানদের বসতঘরের জায়গা ছাড়া চাষযোগ্য কোনো জমি নেই। অভাব-অনটনে পড়ে সংসারের প্রয়োজনে তিনি স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকতা শুরু করেন।

এরপর পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন ইতালিতে। এজন্য স্থানীয় এক আদম ব্যবসায়ীর কাছে টাকা ও পাসপোর্ট জমা দিয়েছিলেন। ইতালি যেতে আরও বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে বিধায় জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শুরুতে তিনি আশুলিয়ার বাইপাইল একটি কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরি নেন এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন।

জানা গেছে, গত বছর ৪ আগস্ট বিকেলে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সে সময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট, কাঁদানো গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ইমরান মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

আন্দোলনকারীরা ইমরানকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলেও তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে ইমরানকে আশুলিয়া মা ও শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা সাড়ে চার ঘণ্টা চেষ্টার পর ইমরানের মাথা থেকে গুলি বের করতে সক্ষম হন। ইমরানের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ২৫ দিন পর সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিন মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর কিছুটা সুস্থ হলে বাড়িতে ফেরেন। চিকিৎসা শেষে ইমরান বাড়িতে ফিরলেও এক বছরে এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি ইমরান।

ইমরানের বাবা বিল্লাল বলেন, আমার সুস্থ-সবল ছেলে ইমরান আজ এক বছরেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি। ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

তিনি বলেন, পরিবারের আয়ের উৎস ছিল আমার রিকশা আর ছেলের সামান্য আয়। ছেলের চিকিৎসার জন্য রিকশাটি বিক্রি করে দিয়েছি। এখন পরিবার নিয়ে চলতে পারছি না। স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে। আমি সরকারের কাছে ছেলের সুচিকিৎসার দাবি জানাই এবং যারা আমার ছেলেকে গুলি করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

উল্লেখ্য, এ ঘটনায় ইমরানের বাবা বিল্লাল বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদকে প্রধান আসামি করে করে ১১ জন এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অটোরিকশা চালককে গুলি করে হত্যা

মারা গেলেন ‘দেবদাস’ খ্যাত অভিনেত্রী নাজিমা

এক সপ্তাহ রাতে ওয়াই-ফাই বন্ধ রাখলে কী হয় জেনে নিন

অনুমতি ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ করা কি জায়েজ আছে?

আবারও বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি

চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল

আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানো মামলায় দ্বিতীয় দিনের শুনানি আজ

বিলুপ্তির পথে সুস্বাদু বৈরালি

আত্মহত্যা নিয়ে হিরো আলমের নতুন সিদ্ধান্ত

শিশুদের মূত্রনালির সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতন হোন

১০

এবার ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ

১১

গ্যারান্টি দিয়ে বলছি ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে : রাশেদ 

১২

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন প্রকাশ

১৩

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় নিয়োগ

১৪

এইচএসসি পাসেই বসুন্ধরা গ্রুপে চাকরির সুযোগ

১৫

বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যুবলীগ কর্মীকে গলা কেটে হত্যা

১৬

চীনের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধে আবারও পিছু হটলেন ট্রাম্প

১৭

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

১৮

বাঙালিদের কাছে আলু কেন এত জনপ্রিয়

১৯

গোপনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন প্রেমিক, অতঃপর...

২০
X