সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের কানাইদিয়া-কপিলমুনি সংযোগ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২৫ বছর আগে। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও আজও শেষ হয়নি এ সেতুর কাজ।
ফলে কপোতাক্ষ নদের বুকে দাঁড়িয়ে আছে ১৮টি পরিত্যক্ত পিলার। এতে একদিকে নাব্য হারাচ্ছে নদী, অন্যদিকে কপিলমুনি বাণিজ্যিক শহর বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০০০ সালে তৎকালীন সরকার কানাইদিয়া-কপিলমুনি সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) খুলনার তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এন হক অ্যাসোসিয়েটস টেন্ডার পেয়ে ২০০০ সালের ১২ এপ্রিল কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু ২০০৩ সালের ১২ নভেম্বর পর্যন্ত আংশিক কাজ শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আইএফআইসি ব্যাংকের খুলনা শাখা থেকে উত্তোলন করে ১ কোটি ৬৭ লাখ ৭২২ টাকা এবং পরে কাজ বন্ধ রেখে দেয়। এ ঘটনায় এলজিইডি মামলাও করে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
এলাকাবাসী জানায়, ব্রিটিশ আমল থেকেই কপিলমুনি বাণিজ্যিক শহর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র ছিল। সেতুটি নির্মিত হলে সাতক্ষীরা ও খুলনার পাইকগাছা উপজেলার জনগণ ব্যাপকভাবে উপকৃত হতো। কিন্তু সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় নদের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ১৮টি পিলারের কারণে পলি জমে কপোতাক্ষ নদের নাব্য হ্রাস পেয়েছে। নদী পুনর্জীবিত করার দাবিতে আন্দোলনের মুখে ২০১১ সালে কপোতাক্ষ নদ খননের জন্য সরকার ২৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও সেতুর কাজ আর শুরু হয়নি।
জালালপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আনারুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১৯ গ্রামের কৃষক তাদের উৎপাদিত খাদ্যশস্য কপিলমুনি বাজারে বিক্রি করে থাকেন। সেতুটি নির্মিত হলে বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে।
জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু বলেন, বহুবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও সেতু নির্মাণ আজও শুরু হয়নি। হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন বাঁশের সাঁকো পার হয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে।
এলজিইডি খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সরদার বলেন, সেতুটি বাস্তবায়নের জন্য বর্তমানে কোনো বরাদ্দ নেই। তবে স্থানীয়ভাবে গুরুত্ব দিয়ে আবেদন করা হলে বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন