বগুড়ায় স্কুলছাত্র রনি আকন্দ (১২) হত্যা মামলার রায়ে রানা মণ্ডল ওরফে রানাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তবে গ্রেপ্তারের পর হতে তার সাজা কার্যকর হবে।
বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেলে বগুড়ার অতিরিক্ত দায়রা জেলা জজ আদালত নং-৩ এর বিচারক লুৎফর রহমান শিশির এ মামলার রায় দেন। ১৭ বছর ধরে এ মামলা চলার পর বুধবার রায় দেওয়া হলো।
দণ্ডপ্রাপ্ত রানা মণ্ডল (৪০) বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচী গ্রামের তারা মণ্ডলের ছেলে। এই মামলার অপর ৫ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত নাহওয়ায় তাদের খালাসের আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. এজেএম শামছুদ্দিন স্বপন রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বগুড়া শহরের ধাওয়াপাড়ার শামশুল আলম ও নাছিমা বেগমের ছেলে সাবগ্রাম কুদরতিয়া স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। ধাওয়াপাড়ায় তাদের বাড়ির পাশে তুলি ও মুক্তারের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাসকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামি রানা মণ্ডল ২০০৮ সালের ১২ জানুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে তাদের বাড়িতে গিয়ে স্কুলছাত্র রনি আকন্দকে বেড়ানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। স্কুলছাত্র রনি যাবার সময় তার বাইসাইকেলটি নিয়ে যায়।
পরে রাত ১০টা পর্যন্ত রনি বাড়িতে ফিরে না আসায় তার মা নাছিমা বেগম সাজাপ্রাপ্ত আসামির মা অহেলাকে জিজ্ঞাসা করলে পরের দিন আসবে বলে জানায়।
এরপর রনির মা বিভিন্ন স্থানে তার ছেলে রনির খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে জানতে পারে যে, সোনাতলা উপজেলার শ্যামবুর (শ্যামনুর) গ্রামের জনৈক অছিম উদ্দিনের বাড়ির পশ্চিমে হাত-পা বাঁধা খড় পাতা দিয়ে ঢেকে রাখা একটি লাশ পাওয়া গেছে। ওই সংবাদ পেয়ে রনির মা ঘটনাস্থলে লোকজনসহ গিয়ে লাশটি তার ছেলে রনির বলে শনাক্ত করে।
এ ব্যাপারে ওই আসামিদের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় নিহত রনির মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ আসামি রানা মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে। রানা মণ্ডল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। মামলাটি তদন্ত শেষে এসআই মাহবুবুল আলম ওই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।
মামলাটি পরিচালনা করেন বাদী রাষ্ট্র পক্ষে অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. এজেএম শামছুদ্দিন স্বপন এবং আসামি পক্ষে অ্যাড. এসএম নুরুজ্জামান মেহেবুব ও অ্যাড. জাকির হোসেন।
মন্তব্য করুন