সিলেটে আলোচিত রায়হান আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি বরখাস্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া ফের দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) আদালতে বিচারাধীন এ মামলার ধার্য তারিখে সে হাজির হয়নি। এতে করে এসআই আকবরের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন আরও স্পষ্ট হয়েছে।
গত ১০ আগস্ট উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরদিন ১১ আগস্ট সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পান আকবর। পরে ১৪ আগস্ট হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালতে আকবর হোসেন ভূঁইয়ার জামিন স্থগিত করে ১০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
এদিকে মহানগর জজ আদালতের বিচারক অনুপস্থিত থাকার কারণে বুধবার আদালতে এ মামলার শুনানি হয়নি। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে। বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেন সিলেট জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন।
আকবরের জামিনের পর একই মামলায় আরও দুই পুলিশ সদস্য জামিনে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। তারা হলেন কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস (৩৮) ও হারুন অর রশিদ (৩২)। ২০ ফেব্রুয়ারি টিটু এবং ১৭ এপ্রিল হারুন অর রশিদ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
এর আগে ২০২২ সালের ১২ জুন জামিন পেয়ে পলাতক আছেন এসআই হাসান উদ্দিন (৩২)। এ ছাড়া মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের আগেই দেশের বাইরে পালিয়ে যান সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল নোমান নামের আরেক আসামি। তিনি সম্পর্কে আকবরের আত্মীয়।
আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, রায়হান হত্যা মামলার শুনানি আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়েছে। ওই দিন সিলেট মহানগর জজ আদালতের নবাগত বিচারকের সামনে আমাদের কার্যক্রম শুরু করব। এই মামলার প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া। আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি , আকবর পালিয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে এসআই আকবর কোথায় আছে তা বলতে পারছি না।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাতে সিলেট মহানগরের কাস্টগড় থেকে রায়হানকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। রাতভর নির্যাতন চালিয়ে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় পরদিন সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রায়হানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। হত্যাকাণ্ডে সিলেটজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
শেষ পর্যন্ত পুলিশি নির্যাতনে বিষয়টি প্রমাণিত হয়। ঘটনার পরদিন কর্মস্থল থেকে পালায় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তখনকার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রধান আসামি এসআই আকবর হোসেন। পুলিশ সক্রিয় থাকায় ওই বছরের ৯ নভেম্বর ভারত পালানোর সময় কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার হয় সে।
মন্তব্য করুন