বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টা। চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সামনে বসে থাকতে দেখা যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুরুতর আহত ইমতিয়াজ আহমেদের মা শাহনাজ আমিনকে।
ছেলের এমন অবস্থা দেখে অনেকটা ভেঙে পড়েছেন তিনি। কিছুক্ষণ স্বাভাবিক থাকছেন, আবার কেঁদে উঠছেন। ইমতিয়াজের সহপাঠী ও বিভাগের শিক্ষকরা সান্ত্বনা দিয়ে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন।
কাছে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই তিনি বলেন, ইমতিয়াজকে জখম করার পর মোবাইল, মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। তিনি প্রশ্ন রাখেন, মোবাইল তো তাদের (গ্রামবাসী) কাছে আছেই, ট্র্যাকিং করে কেন হামলাকারীদের ধরা হচ্ছে না?
রোববার দুপুরে স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ইমতিয়াজ ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মামুনের মাথায় গুরুতর জখম পান। রাতেই অস্ত্রোপচারের পর তাদের লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মামুনকে কেবিনে স্থানান্তর করা হলেও ইমতিয়াজের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। সর্বশেষ দুপুর আড়াইটার দিকে পার্কভিউ হাসপাতালে নিউরো সার্জন, নিউরো মেডিসিন ও মেডিসিনের পাঁচজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড বসানো হয়।
পার্কভিউ হাসপাতালের জিএম তালুকদার জিয়াউর রহমান শরীফ বিকেলে কালবেলাকে বলেন, তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি। ইমতিয়াজের সিটি স্ক্যানে মাথায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে দেখা গেছে। এই রক্তক্ষরণ বন্ধে একটা অপারেশনের প্রয়োজন। পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্মতি দিলে আজ রাতেই অপারেশন করা হবে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাহনাজ আমিন বলেন, আমার ছেলের রক্তের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি ফিরুক। আমি আমার ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিল। এমন পরিণতি যেন আর কারও মায়ের সন্তানের না হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ রিপন কালবেলাকে বলেন, আমরা প্রতিদিনই হাসপাতালে আসছি। আমাদের শিক্ষার্থীরাও পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা অবস্থান করছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করছি। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। তারা সুস্থ হয়ে আবার ক্লাসরুমে ফিরে যাবে আমাদের এটাই চাওয়া।
মন্তব্য করুন