মহিপুর (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

গঙ্গামতির সংরক্ষিত বন উজাড়

বন কেটে উজাড় করা হচ্ছে। ছবি : কালবেলা
বন কেটে উজাড় করা হচ্ছে। ছবি : কালবেলা

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন ধূলাসার ইউনিয়নের চর গঙ্গামতি এলাকায় সংরক্ষিত বনের প্রায় ৫০ শতাংশ জায়গার গাছ কেটে দখল করে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। দখলকৃত জমিতে শুরু করেছে কৃষিকাজ। ফলে ধ্বংসের মুখে পড়েছে পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ বনাঞ্চল।

সরেজমিন দেখা গেছে, চর গঙ্গামতি এলাকার সংরক্ষিত বনের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। কেওড়া, ঝাউ, আকাশমনি, রেইনট্রি গাছ কেটে বনের জায়গায় বালু ভরাট করে গড়ে তোলা হচ্ছে কৃষিজমি। অনেক জায়গায় এরই মধ্যে বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী বেলাল শরীফ, ইয়ামিন শরীফ, আল-আমিন শরীফ ও মন্নান শরীফের নেতৃত্বে এই দখল-বাণিজ্য চলছে। তারা বন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।

বন বিভাগ থেকে মাঝে মধ্যে দু-একটি মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রভাবশালী দখলদারকে আইনের আওতায় আনা হয়নি।

তবে অভিযুক্ত আলামিন শরীফের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওখানে আমাদের কোনো জমি নেই। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। কে বা কারা বনের গাছ কেটেছে আমরা জানি না।

এ বিষয়ে উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের (উপরা) সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মিরাজ বলেন, পরিবেশ রক্ষায় উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর গুরুত্বপূর্ণ বন হিসেব খ্যাত গঙ্গামতির এই বনাঞ্চল। এই বনের ওপর নির্ভর করে টিকে আছে প্রকৃতি ও পরিবেশ। রক্ষা হচ্ছে উপকূলের লাখো মানুষের জীবন। বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই বন। বনটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ছোবল থেকে উপকূলের মানুষের রক্ষাকবচ হিসেবেও বেশ ভূমিকা রাখে। বনটি যারা ধ্বংস করছে তারা দেশ ও জাতির শত্রু। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সরজমিন দেখা যায়, বনের গাছ কেটে মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় এক জেলে। নাম সোবাহান মাঝি। গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্যারেরা জানে, স্যারেগো ধ্যারে কইয়্যা লইছি, তারা ডাল কাটতে কইছে।’

তবে বন বিভাগ এ বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই গঙ্গামতির বন সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, বন বিভাগের কর্মকর্তাদের টাকা-পয়সা দিয়ে স্থানীয়রা বনের গাছ কাটে। আমরা জানালেও তারা আসে না।

চর গঙ্গামতি এলাকার বিট কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঘটনা শোনার পরে আমি পরিদর্শন করেছি। স্থানীয়দের ডেকে বন পরিষ্কার করা যাবে না বলে জানিয়েছি। তবে ঘটনাস্থলে কাউকে পাইনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

বন বিভাগ মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, বিট কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

উপকূলীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জাহিদুর রহমান মিয়াকে তার মুঠোফোন একাধিকবার কল দিলেও সেটি রিসিভ হয়নি। পরে তার হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কাতারও জানত ইসরায়েল হামলা করবে, দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

চীন-ভারতের ওপর এবার ১০০ শতাংশ শুল্ক বসাতে বললেন ট্রাম্প 

শেখ হাসিনার পূবালী ব্যাংকের লকার জব্দ

মসজিদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল এখন গলার কাঁটা

আমি বরাবরই খুব ইমোশনাল: শ্রাবন্তী

ডাকসুতে কে কত ভোট পেলেন?

বাছাইপর্বে বিশ্বরেকর্ড ছুঁলেন রোনালদো

শীর্ষ চাল ব্যবসায়ী রশিদ গ্রেপ্তার

প্লট দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেপ্তার 

হলান্ডের পাঁচ গোলে নরওয়ের ১১ গোলের ধ্বংসযজ্ঞ

১০

স্ত্রীর সামনে ১৭ মামলার আসামিকে গলা কেটে হত্যা

১১

ডাকসু নির্বাচনে বিজয় উপলক্ষে ছাত্রশিবিরের কর্মসূচি ঘোষণা

১২

কাতারে ইসরায়েলি বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানাল পাকিস্তান

১৩

কেমন ছিল জিৎ-কোয়েলের সম্পর্ক?

১৪

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ব্রাজিলের লজ্জার রেকর্ড

১৫

বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মামা-ভাগ্নেকে কুপিয়ে হত্যা

১৬

ফের আইনি বিপাকে আল্লু আর্জুন

১৭

বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন সেই সর্ব মিত্র চাকমা

১৮

ভিন্ন রূপে ছোট পর্দায় আভেরী

১৯

জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো সেই জসিম আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত

২০
X