কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১৪ এএম
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:২২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ডাকসুর ফলাফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত
হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে রাতের মধ্যেই। ইতোমধ্যেই ফলাফলকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ ডাকসুর ফলাফল নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

নিজের সেই পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, ‘আজ ডাকসুতে যারা জিতবে, তারা কীভাবে দায়িত্ব নেবে এবং যারা হারবে, তারা কীভাবে পরাজয় গ্রহণ করবে, এই দুইটি প্রশ্নের উত্তর বলে দিবে আমাদের জাতীয় রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে।’

হাসনাত আব্দুল্লাহর সেই স্ট্যাটাসের বাকি অংশ হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো-

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিজেদের প্রভাব দেখিয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পেশিশক্তি, জনশক্তি এবং সংগঠিত উপস্থিতির মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার যে চেষ্টা চলছে, তা ছাত্র রাজনীতির নিজস্ব চরিত্রকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ডাকসু এখন কেবল ছাত্রদের ম্যান্ডেট বহন করছে না, বরং পরিণত হয়েছে জাতীয় রাজনৈতিক দলের একটি এক্সটেনশন গেমে, যা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।

এর পাশাপাশি শিক্ষক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সবার প্রতি এক ধরনের গণহারে ট্যাগ বসানোর প্রবণতাও আজ স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। এই প্রবণতা শেখ হাসিনার শাসনামলের রাজনৈতিক বাস্তবতারই ধারাবাহিকতা, যেখানে বিভাজন, সন্দেহ আর দমননীতি ছিল প্রাতিষ্ঠানিক। এই মানসিকতা দীর্ঘমেয়াদে আমাদের রাজনীতিকে অনিরাপদ ও সংকুচিত করে তুলবে।ট্যাগিং ও বর্গীয় রাজনীতির অবশ্যই অবসান হতে হবে।

ছাত্র রাজনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হলে এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তোলা প্রয়োজন, যেখানে নিয়মিতভাবে নতুন নেতৃত্ব আসবে, পরাজয়কে পরবর্তী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হবে।

ডাকসু নির্বাচন সেই সংস্কৃতি তৈরির একটি সম্ভাব্য শুরু হতে পারত। হতে পারত বলছি, কারণ এই ভোটের ফলাফল গ্রহণ নিয়ে এখনো এক ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক দলগুলো এই ফলাফলকে ঘিরে শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর।

সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষের উচিত ভোটারদের রায়কে সম্মান করা এবং জনগণের চাওয়াকে মাথা পেতে নেওয়ার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা। সব সময় জয়ী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা গণতন্ত্র নয়। গণতন্ত্রের অন্যতম মূল ভিত্তি হচ্ছে সহিষ্ণুতা। যাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করি, তাকেও যদি জনগণ বেছে নেয়, সেই বেছে নেওয়াকে সম্মান করাই গণতন্ত্র।

এই পরিস্থিতিতে আমি দেশের সব রাজনৈতিক দলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। নিজেদের স্বল্পমেয়াদি রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করার ফলাফল আমরা গত ১৭ বছর ধরে দেখেছি। এখন সময় এসেছে এই চক্র থেকে বেরিয়ে এসে জনগণের চাওয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়ার। পরাজয়কে সম্মানিত করার সংস্কৃতি গড়ে তোলার। নইলে আগামী দিনের রাজনীতি জয়ীদের উল্লাস আর পরাজিতদের ক্ষোভে বন্দী থেকে যাবে, আর গণতন্ত্র কোনদিন পূর্ণতা পাবে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

১৩ হলের ফল প্রকাশ, এগিয়ে সাদিক কায়েম

বলিভিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছে ব্রাজিল, মোবাইলে খেলা দেখবেন যেভাবে

চলছে ইকুয়েডর-আর্জেন্টিনা ম্যাচ, খেলা দেখবেন যেভাবে

ঢাকা ওয়াসা জাতীয়তাবাদী এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচিত

ডাকসু বর্জনের ঘোষণা উমামা ফাতেমার

জগন্নাথ হলে সাদিক কায়েম পেলেন মাত্র ১০ ভোট

‘হা হা’ ইমোজি দিয়ে মধ্যরাতে ভিপি প্রার্থী উমামার পোস্ট

ভোটের ফলাফল মেনে নিয়ে ফেসবুক পোস্ট হামিমের

ফলাফল প্রত্যাখ্যান করলেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদ

ছয় হলের ফল প্রকাশ, শীর্ষ তিন পদেই এগিয়ে শিবির

১০

তিন হলের ফল ঘোষণা, শিবির প্যানেল এগিয়ে 

১১

ডাকসু নির্বাচন : নেতাকর্মীদের যে নির্দেশ দিল জামায়াত

১২

সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করার অভিযোগ এস এম ফরহাদের

১৩

শাহবাগে মুখোমুখি অবস্থানে ছাত্রদল ও শিবির সমর্থকরা

১৪

ডাকসুর ফলাফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

১৫

ডাকসুর ফল ঘোষণা কীভাবে, জানালেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা

১৬

ডাকসুর ভোট গণনায় সময় লাগার কারণ জানালেন অধ্যাপক শামীম রেজা

১৭

বড় জয়ে এশিয়া কাপে দুর্দান্ত শুরু আফগানদের

১৮

ছাত্রদল নেতার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা, ঢাবি শিক্ষক বললেন, ‘এই কষ্ট কোনোদিন ভুলব না’

১৯

ডাকসু : উত্তেজনা নিরসনে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে কথা বলেছে সরকার

২০
X