মাত্র ৬ শতক জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাতিজার রডের আঘাতে আহত চাচা ১১ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর আনোয়ার হোসেন (৭৪) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আরও তিনজন। গত ২৫ আগস্ট সকালে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার নলমুড়ি ইউনিয়নের চরমনপুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের ছোট ছেলে আজাহার উদ্দিন অভি (২৬) বাদী হয়ে ভাতিজা মহিউদ্দিনকে প্রধান আসামি করে মোট ৬ জন এবং আরও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোসাইরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গোসাইরহাট থানাধীন নলমুড়ি ইউনিয়নের আনোয়ার হোসেন ও মহিউদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ৬ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মীমাংসা করে দেয়। এর রেশ ধরে গত ২৫ আগস্ট আনোয়ার সরদার তার জমিতে ঘর নির্মাণ করতে গেলে বাধা প্রদান করেন মহিউদ্দিন পক্ষের লোকজন। এ সময় তারা দেশি অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে আনোয়ার হোসেনের ছেলে-মেয়েদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে বৃদ্ধ আনোয়ার তার সন্তানদের মারতে নিষেধ করলে ভাতিজা মহিউদ্দিন তাকে পিটিয়ে জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে গোসাইরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরবর্তীতে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। একপর্যায়ে অবস্থার অবনতি হলে আনোয়ার হোসেনকে ঢাকা শের-ই-বাংলা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজিস্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১১ দিন চিকিৎসার পর গত ৫ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান। গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিন রাত ৯টায় তার নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
নিহতের বড় ছেলে এস এম আলাউদ্দিন বলেন, ‘তারা ঢাকায় বসবাস করতেন। এ অবস্থায় তাদের জমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে ছিল তার চাচাতো ভাই মহিউদ্দিন সরদারসহ অন্যান্যরা। এই বিষয়ে স্থানীয়রা সালিশে বসে জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেয়। গত ২৫ আগস্ট সকালে ওই জমিতে ঘর নির্মাণ করতে গেলে মহিউদ্দিন বাধা প্রদান করে। একপর্যায়ে বাবাকে মাথায় রড দিয়ে আঘাত করেন মহিউদ্দিন।
তিনি বলেন, আসামিপক্ষ হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে এখন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন নাম্বার থেকে কল করে আমাদের ও মামলার সাক্ষীদের হুমকি দিয়ে আসছে। আমি এবং আমার পরিবার আসামিদের ফাঁসি চাই।
গোসাইরহাট থানার ওসি মো. আসলাম সিকদার বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধীদের জেরে সংঘর্ষে আনোয়ার সরদার নামে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তবে এখন তারা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে এসেছে।’
মন্তব্য করুন