চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় সুদের টাকা আদায় করতে এক মরদেহের দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মর্জিনা খাতুন নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। অবশেষে টাকা পরিশোধ করেই দাফন করতে বাধ্য হয়েছে পরিবার।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) উপজেলার চিৎলা গ্রামের নতুনপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে।
নিহত হারুন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার চিতলা গ্রামের নতুন পাড়ার নিয়ামত আলীর ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেয়ের বাড়ি মেহেরপুরের মহাজনপুরে বেড়াতে গিয়ে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রাজমিস্ত্রি হারুন। মরদেহ নিজ গ্রামে আনা হলে পরিবার-পরিজনের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। এদিন আসরের নামাজের পর তার দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। গোসল করানোর সময় সেখানে হাজির প্রতিবেশী মর্জিনা খাতুন। এ সময়ই ঘটে হৃদয়বিদারক ও অবিশ্বাস্য এক অমানবিকতা।
মর্জিনা নামে ওই নারীর দাবি, হারুনের কাছে ১৫ হাজার টাকা পাবেন তিনি। আসল নয়, সুদের টাকা! মর্জিনা ও তার মেয়েকে এমনিতেই এড়িয়ে চলে গ্রামবাসী। কারণ সবাই জানে, এরা মামলাবাজ। মর্জিনার একটাই কথা। সুদবাবদ ওই ১৫ হাজার টাকা না পেলে হারুনকে দাফন করতে দেবেন না। সবাই হতবাক। বিক্ষুব্ধ হলো কেউ কেউ। শেষমেশ হারুনের পক্ষে পরিবারের লোকজন দাবিকৃত সুদের টাকা পরিশোধ করলে পথ ছাড়েন মর্জিনা।
এদিকে টাকা কুড়িয়ে নেওয়ার সময় উপস্থিত কেউ কেউ রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। মরদেহ আটকে সুদের টাকা আদায়ের ঘটনায় হতবাক গ্রামবাসী। তবে ওই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ হলে তা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সৃষ্টি হয় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড়।
দামুড়হুদা ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী কালবেলাকে বলেন, ‘এটি অমানবিক ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। এ ঘটনায় জড়িত সুদ কারবারিদের বিচার হওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে দামুড়হুদা ইউএনও তিথী মিত্র কালবেলাকে বলেন, ‘ঘটনটি শুনেছি। ভিডিও দেখেছি। এটি অমানবিক। আমি আরও খোঁজখবর নেব।’
মন্তব্য করুন