তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত পার করছেন নদীপাড়ের মানুষ। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদীপাড়-সংলগ্ন রাস্তাঘাট এরই মধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ।
সরেজমিন দেখা গেছে, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের গাজীরমোড় ও বটতলা এলাকায় স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে মাটিভর্তি বস্তা ফেলে পানি ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া সানিয়াজান, সিঙ্গিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় তিস্তার পানি প্রবেশ করেছে।
পাশাপাশি তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার একমাত্র ফ্লাইড বাইপাস সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যে কোনো সময় লালমনিরহাট-নীলফামারীর যোগাযোগের এ মাধ্যমটি ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, রোববার (৫ অক্টোবর) রাত ৮টার পর থেকে তিস্তা নদীর ফ্লাইড বাইপাস সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে যে কোনো সময় লালমনিরহাট-নীলফামারীর এই গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ সড়কটি ভেঙে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা পাড়ে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে যেতে মাইকিং করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এদিকে সকাল থেকে উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়ে রাত ১২টায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে চলাচলের রাস্তাঘাটসহ মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলি জমিও পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষ এখন বন্যা ও নদী ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
হাতীবান্ধার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধন ও মহিষখোঁচা এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর ও নিম্নাঞ্চলের এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে বিপৎসীমার ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে এবং বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিস্তার ফ্লাইড বাইপাস সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তাপাড়ের মানুষকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন