কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কিশোর মো. জসিম মোল্লা (১৮)। সে উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মো. মোকাদ্দেস মোল্লার ছেলে। পেশায় দিনমজুর। প্রায় চার বছর আগে মাত্র ১৪ বছর বয়সেই পারিবারিকভাবে প্রথম বিয়ে করে ওই কিশোর। বিয়ের এক মাসের মাথায় বিষপানে আত্মহত্যা করে সেই স্ত্রী।
এরপর পাঁচ মাসের মাথায় দ্বিতীয় বিয়ে করে ওই কিশোর। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় বছরখানেক পরে বিচ্ছেদ হয় তাদের। এ ঘটনার প্রায় এক বছর না পেরোতেই প্রেম করে তৃতীয় বিয়ে করে ওই কিশোর। কিন্তু তৃতীয় বিয়ের ৯ মাসের মাথায় আবার বিচ্ছেদ হয় তাদের। পরে সে ঢাকায় গিয়ে সেখানে একটি কারখানায় কাজের ফাঁকে এক কিশোরীর সঙ্গে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে প্রায় সাত মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। আড়াই মাস আগে চতুর্থ স্ত্রী নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন জসিম।
তবে টিকল না চতুর্থ স্ত্রীও। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চতুর্থ স্ত্রী সুলতানা খাতুনও (১৮) মারা যায়। মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। এর আগে সকাল ১১টা ৫ মিনিটে মৃত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন শাশুড়ি রাবেয়া খাতুন।
বেলা একটার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, মরদেহের সুরতহাল করছে পুলিশ। পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন শাশুড়ি। হাসপাতালে আসেনি স্বামী জসিম মোল্লা। উৎসুক জনতা ভিড় করেছেন।
এ সময় নিহত গৃহবধূর শ্বাশুড়ি রাবেয়া খাতুন জানান, ১৮ বছর বয়সেই তার ছেলে জসিম চারটি বিয়ে করেছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ছেলের চতুর্থ স্ত্রী সুলতানা বিষপান করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি ভ্যানে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানকার চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে তার ছেলে হাসপাতালে আসেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ঘটনার পর থেকেই গৃহবধূর কিশোর স্বামী জসিম পলাতক রয়েছে। এ বিষয়ে তার বাবা মোকাদ্দেস মোল্লা বলেন, তার ছেলের বয়স ১৮-১৯। ছেলে ভালো না। তিনি ছেলের সঙ্গে কথা বলে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আকুল উদ্দিন বলেন, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। পোস্ট মর্টেমের পরে মৃত্যু কারণ বলা যাবে।
কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক মো. মারুফ হাসান বলেন, খবর পেয়ে মরদেহের সুরতহাল করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অস্বাভাবিক মৃত্যু। ডান কানের পাশে লালচে দাগ রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
মন্তব্য করুন