

ময়মনসিংহে গত ৬ দিনের ব্যবধানে ছয়জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১৯ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যুবরণকারীদের মাঝে ১৮ জনই গত আড়াই মাসে মারা গেছেন। যারা মারা গেছেন তাদের সবাই ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সি। ক্রমাগত রোগী মৃত্যুর ফলে অন্যান্য রোগী এবং স্থানীয় মানুষদের মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১৬ নভেম্বর) পর্যন্ত ৯০ জন রোগী ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। ৪০ শয্যার ওয়ার্ডে অধিকাংশ রোগীই শয্যা না পেয়ে মেঝেতে অবস্থান করছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৪১ জন পুরুষ, ১৬ জন নারী এবং ৯ শিশু রয়েছে। ভর্তি হওয়া রোগীদের মাঝে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪১ জন ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ বছর এখন পর্যন্ত দুই হাজার ২৩০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন।
মৃত্যুবরণকারীদের অধিকাংশই ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম সমস্যায় মারা গেছেন। এ ছাড়া অনেক রোগীর হৃদরোগ, ফুসফুস জনিত সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যাও ছিল বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
নগরীর ধোপাখোলা এলাকার বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, সন্ধ্যার পর ঘরে বসে থাকা দায়। কয়েল, স্প্রে, ব্যাট কিছুতেই কাজ হয় না। শিশুরা ঘুমাতে পারে না, সকালে স্কুলে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ড্রেন, খাল ও আবর্জনার স্তূপ মশার প্রজননস্থলে পরিণত হয়েছে। সিটি করপোরেশনের ফগার মেশিনের ধোঁয়াও তেমন কাজে আসছে না।
ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ফোকাল পারসন ডা. ফয়সাল রাহাত বলেন, যেসব রোগীরা মারা গেছে, তাদের অধিকাংশই একদম শেষ মুহূর্তে এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তারা তাদের সাধ্যমতো চিকিৎসাসেবা প্রদান করছেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) সচিব ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আল মজিদ কালবেলাকে বলেন, সিটি করপোরেশন মশা নিধনে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। তবে জনগণের সচেতনতা ছাড়া এ পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। মাইকিং, লিফলেট বিতরণসহ জনসচেতনতা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ড্রেন পরিষ্কার, কাদা-ময়লা অপসারণ এবং ঝোপঝাড় পরিষ্কারের কাজও চলমান।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. জাকিউল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। চিকিৎসক ও নার্সরা আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।
মন্তব্য করুন