

পাঁচ দিনের শুভেচ্ছা সফরে রাশিয়ান নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘গ্রিমিয়াশ্চি’ (GREMYASHCHY) বাংলাদেশে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সামরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদারের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায় এ যুদ্ধজাহাজ।
জাহাজটি বন্দরে নোঙর করলে চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল কমান্ডারের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার অতিথি জাহাজের অধিনায়ক, কর্মকর্তা ও নাবিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদকদল ঐতিহ্যবাহী সামরিক রীতিতে ব্যান্ড পরিবেশন করে সম্মাননা জানায়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার মিলিটারি অ্যাটাশে, নৌবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারা রাশিয়ান জাহাজকে স্বাগত জানানোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের পর বঙ্গোপসাগরে রাশিয়ান জাহাজটিকে অভ্যর্থনা জানায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা ওমর ফারুক’।
পাঁচ দিনের এ শুভেচ্ছা সফরে রাশিয়ান জাহাজের অধিনায়ক এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ান মিলিটারি অ্যাটাশেসহ প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল কমান্ডার, কমান্ডার বিএন ফ্লিট, এরিয়া সুপারিনটেনডেন্ট ডকইয়ার্ড এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এসব বৈঠকে দুই দেশের নৌবাহিনীর পেশাগত কার্যক্রম, প্রযুক্তিগত জ্ঞান, ভবিষ্যৎ প্রশিক্ষণ বিনিময় ও পারস্পরিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
সফরকালে রাশিয়ান নৌসদস্যরা বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির রেডকিন পয়েন্টে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। পাশাপাশি নৌবাহিনীর বিভিন্ন ঘাঁটি, যুদ্ধজাহাজ, নেভাল একাডেমি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য পরিচালিত বিএন আশার আলো স্কুল এবং চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করবেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা ‘গ্রিমিয়াশ্চি’ জাহাজটি ঘুরে দেখবেন, যাতে দুই দেশের সদস্যরা পরস্পরের প্রযুক্তি, অপারেশনাল সক্ষমতা ও পেশাগত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ঘনিষ্ঠভাবে ধারণা লাভ করতে পারেন।
নৌবাহিনী সূত্র জানায়, এ ধরনের শুভেচ্ছা সফর দুই দেশের সামরিক কূটনীতি আরও দৃঢ় করার পাশাপাশি সমুদ্র নিরাপত্তা, ভবিষ্যৎ যৌথ মহড়া এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার সম্ভাবনা বাড়ায়। বিশেষ করে কর্মকর্তা ও নাবিক পর্যায়ে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়ায় এবং আন্তঃপেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখে। অতীতেও রাশিয়ান নৌবাহিনীর জাহাজ বাংলাদেশে সৌজন্য সফরে এসেছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতার প্রমাণ।
রাশিয়ার উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন ‘গ্রিমিয়াশ্চি’ জাহাজের এ সফর নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ-রাশিয়া নৌ-সহযোগিতাকে আরও গতিশীল করবে বলে আশা করছে নৌ সদর দপ্তর। বন্ধুত্বপূর্ণ এ সফরের মাধ্যমে দুই দেশের নৌশক্তি পরস্পরের সামরিক পেশাগত উৎকর্ষ, নৌ-অভিযান পরিচালনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের নতুন সুযোগ তৈরি করবে।
মন্তব্য করুন