নাটোরের গুরুদাসপুরে যৌতুকের জন্য মধ্যযুগীয় কায়দায় গৃহবধূকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে গৃহবধূর স্বামী রুহুল আমিনকে (২৬) নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার রুহুল আমিন হলেন- উপজেলার মোল্লাবাজার পূর্বপাড়া এলাকার মৃত রজব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় রুহুল আমিনসহ তিনজনের নামে মামলা দায়ের করেন গৃহবধূর মা মর্জিনা খাতুন।
মঙ্গলবার বিকেলে গৃহবধূর কাছ থেকে যৌতুকের টাকা নেওয়ার জন্য পাশবিক নির্যাতন চালায় স্বামী রুহুল আমিন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় এই গৃহবধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন সেই গৃহবধূ।
এ নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর তৎপর হয় পুলিশ। সেই রাতেই অভিযানে গ্রেপ্তার করা নির্যাতনকারী গৃহবধূর স্বামীকে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের খাঁকড়াদহ গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে কোহেলি খাতুন (২৩)। নগদ তিন লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার যৌতুকের বিনিময়ে রহুল আমিনের সঙ্গে বিবাহ হয় তার। ভালোই চলছিল তাদের সংসার। বছর পেরোতেই যৌতুক হিসেবে আরও ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার জন্য চাপ দেয় স্বামী। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্বামী প্রায়ই তাকে মারধর করত।
মঙ্গলবার এলাকাবাসীর মাধ্যমে তার মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতনের কথা জানতে পারেন বাবা-মা। পরে সেখানে গিয়ে দেখেন তাদের মেয়ে মাটিতে শুয়ে আছে। এলাকাবাসীর সহায়তায় তাদের মেয়েকে সেখান থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
গৃহবধূর মা মর্জিনা খাতুন বলেন, আমার মেয়ের ওপর যে মধ্যযুগীয় কায়দায় পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে তার বিচার চাই। এর সঙ্গে জড়িত তার শ্বশুরবাড়ির সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
ওসি মোনারুজ্জামন জানান, গৃহবধূর ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানা মাত্রই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে নির্যাতনকারীকে না পাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযানে সেই রাতে আটক করে থানায় আনা হয় নির্যাতনকারীকে। থানায় রুহুল আমিনসহ তিনজনের নামে যৌতুক নির্যাতন মামলা দায়ের করেন গৃহবধূর মা মর্জিনা খাতুন। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে গৃহবধূর স্বামীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন