নীলফামারীর ডিমলায় গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে নাউতারা-ডিমলা প্রধান সড়কে নির্মাণাধীন আরসিসি গার্ডার সেতুর পাশে বিকল্প সড়কটি পানিতে তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে সড়কের কাঠের সাঁকো ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই পথে চলাচল করা মানুষজন। বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের ভোগান্তির মধ্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
এদিকে কর্তৃপক্ষ সড়ক সংস্কারের উদ্যেগ না নেওয়ায় স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী, চালক ও পথচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ঝুনাগাছ চাপানি ও নাউতারা এলাকা থেকে উপজেলা সদরের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক নাউতারা-ডিমলার এই সড়ক। ব্যস্ততম এই সড়কে প্রতিদিন যাত্রী ও পণ্যবাহী ছোট বড় হাজারো গাড়ী চলাচল করে থাকে। খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানী ও নাউতারা থেকে উপজেলা সদরে যান চলাচল করে ওই সড়ক দিয়ে। ব্যস্ততম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন তিস্তা চরান্ঞ্চলের নানা পেশার কয়েক হাজার মানুষজন যাতায়াত করে প্রতিদিন।
সরেজমিন দেখা যায়, নাউতারা-ডিমলা সড়কের সোনামনির ভাঙ্গা এলাকায় ৬০ মিটারের একটি আরসিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণকাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। যাতায়াতের জন্য নির্মাণাধীন সেতুর পাশেই খালের পওর বিকল্প সড়ক হিসেবে ছোট কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সেতুর পাশের খাল ও ফসলি মাঠ পানিতে তলিয়ে যায়। পানির চাপে গত ২২ নভেম্বর বিকল্প সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে কাঠের সাঁকো ভেঙে যায়। ফলে রাস্তায় দুই পাশে ছোট-বড় গাড়ি আটকে যায়। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ কারণে অটো ভ্যান, মোটরসাইকেল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীগণ ভাঙ্গা সাঁকোর পাটাতন দিয়ে চলাচলের চেষ্টা করছেন। এতে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে তেমনি পোহাতে হচ্ছে জনদুর্ভোগ।
অটোরিকশাচালক ইলিয়াস হোসেন জানান, গ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে সদরে যাচ্ছি। কিন্তু কাঠের সাঁকো ভেঙ্গে যাওয়ায় এখানে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সড়কটি পানির নিচে। সাঁকোর অবস্থাও খারাপ। সেখানে নামমাত্র পাটাতন দেওয়া হয়েছে। আবার সেগুলোও ধসে গেছে। এখন ছোট গাড়িও চলাচল করতে পারছে না।
পথচারী কৈলাস চন্দ্র বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ থেকে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক নিচু হওয়ায় প্রায় রাস্তার ৪ ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু এখানে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
ডিমলা ইসলামিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জ্যোতি সেন বলেন, সড়ক ডুবে সাঁকো ভেঙ্গে যাওয়ায় তারা কলেজে যেতে পারছেন না।
স্থানীয়দের ভাষ্য, পুরাতন সেতুর ভাঙ্গা আবর্জনা ও রাস্তার মাটি কেটে দায়সারাভাবে নিচু সড়ক ও ছোট কাঠের সাকো তৈরি করে নামমাত্র বিকল্প যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। ফলে সামান্য বর্ষাতে সড়কটি তলিয়ে যায়।
সেতুর সাবঠিকাদার শরিফুল ইসলাম বলেন, দরপত্র অনুযায়ী বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। টানা ভারি বর্ষণের কারণে সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলে সড়ক আবারও সংস্কার করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এলাকার কিছু লোক সেখানে নৌকায় চলাচলের জন্য কাঠের সেতু ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, বিকল্প সড়ক দ্রুত সংস্কারের জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন