বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২
আতাউর রহমান, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ভেষজ উদ্ভিদ লজ্জাবতী

ভেষজ উদ্ভিদ লজ্জাবতী। ছবি : কালবেলা
ভেষজ উদ্ভিদ লজ্জাবতী। ছবি : কালবেলা

অন্যান্য উদ্ভিদের তুলনায় অনেক বেশি স্পর্শকাতর, হাত দিয়ে ছুঁলেই নুইয়ে পড়ে লজ্জায়; এমন উদ্ভিদ একসময় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার রাস্তার পাশে ও ঝোপঝাড়ে যত্রতত্র দেখতে পাওয়া যেত, যা লজ্জাবতী উদ্ভিদ নামেই পরিচিত। প্রাচীনকাল থেকেই এই ভেষজ উদ্ভিদ দিয়ে করা হয় নানা রোগের চিকিৎসা। ভেষজ ওষুধ তৈরিতে প্রয়োজন হয় এ উদ্ভিদের। তবে সংরক্ষণের অভাবে এই ভেষজ উদ্ভিদ গ্রামীণ প্রকৃতি থেকে হারাতে বসেছে।

ইউনানি চিকিৎসকদের তথ্যমতে, লজ্জাবতী উদ্ভিদে রয়েছে ঔষধি গুণ। নানা রকম রোগ প্রতিরোধে কাজ করে এই লজ্জাবতী। শরীরের জন্য বেশ কার্যকরী এই ঔষধি উদ্ভিদ।

জানা গেছে, লজ্জাবতীর ঔষধি গুণাগুণ অত্যন্ত বেশি। হারবাল ওষুধ তৈরিতে এর ব্যবহার যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। যেমন কফ দূর করতে, নাক ও কান থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে, ডায়রিয়া, যেকোনো প্রদাহ, জ্বালাপোড়া, আলসার, কুষ্ঠ কিংবা যোনি রোগ থেকে মুক্তি পেতে লজ্জাবতী উদ্ভিদ ব্যবহার করা হয়। শ্বাসকষ্ট, আলসার, অর্শ্ব বা পাইলস, পেট ফাঁপা, বদহজম ও যেকোনো ক্ষত সারাতে এ উদ্ভিদের রস ভীষণ কাজে দেয়। ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে লজ্জাবতী উদ্ভিদের ডাঁটা ও পাতার ক্বাথ তৈরি করে বগল ও শরীরে ব্যবহার করলে এই রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। লজ্জাবতীর মূল থেঁতো করে সিদ্ধ করে পানি ছেঁকে এই পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও দূর হয় বলে জানান ইউনানি চিকিৎসকরা।

কথা হয় উপজেলার দীর্ঘভূমি এলাকার ৭৯ বছর বয়সী প্রবীণ মানুষ ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের মা-চাচিরা তাদের সন্তানদের পেট খারাপ হলে, আমাশা হলে লজ্জাবতী গাছের পাতার রস খাইয়ে দিতেন। এতে এ রোগ ভালো হয়ে যেত। কাশি হলেও এ পাতার রস খাওয়ালে কাশি ভালো হয়ে যেত। আমরাও আমাদের সন্তানদের খাইয়েছি। এখন আধুনিক যুগে অনেক নতুন নতুন ওষুধ বের হয়েছে ঠিকই, কিন্তু লজ্জাবতীর গুণাগুণ এখনও আগের মতোই আছে। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে আগের মতো এখন আর এ গাছ সচরাচর চোখে পড়ে না।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি মেডিকেল অফিসার ডা. সোহেল রানা বলেন, হারবাল ওষুধ তৈরিতে লজ্জাবতী উদ্ভিদ প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি একটি গুণসম্পন্ন ঔষধি উদ্ভিদ। তবে এই ঔষধি উদ্ভিদ আগের মতো আর তেমন চোখে পড়ে না। উদ্ভিদটি দিন দিন বিলুপ্তির পথে হাঁটছে। ঔষধি এই উদ্ভিদটি টিকিয়ে রাখা জরুরি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেষজ বাগানে এই ঔষধি উদ্ভিদটি নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে সংরক্ষণ করা আছে। আমি মনে করি যার যার অবস্থানে থেকে ঔষধি গুণসম্পন্ন এই উদ্ভিদটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাবেতাতুল ওয়ায়েজীনের সঙ্গে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময়

ডিএনসিসি এলাকায় টাইফয়েডের টিকা পাবে ১৩ লাখ শিশু

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৯ কোটি ডলার

৭ বছর পর শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করলেন খালেদা জিয়া

ফার্মগেটে ককটেল বিস্ফোরণ

কালবেলার সংবাদের পর স্বপ্নের রঙিন ঘরে শাহারবানু

আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিতে কাজ করছে জামায়াত : মুজিবুর রহমান

রাজধানীতে তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারের রেকর্ডেড ভিডিও প্রদর্শন

জবাব দিতে পিএসসিকে আলটিমেটাম

অসদাচরণের অভিযোগে বদলি চিকিৎসক দম্পতি

১০

সড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ

১১

শহীদ জিয়ার মাজারে দোয়া করলেন খালেদা জিয়া

১২

নোয়াখালী বিভাগ চাইলেন ‘কাবিলা’

১৩

বেথ মুনির রেকর্ডে অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত জয়

১৪

‘বিষাক্ত মদ’ পানে সংরক্ষিত ইউপি সদস্যের স্বামীর মৃত্যু

১৫

বিদায় নিচ্ছে মৌসুমি বায়ু, বৃষ্টি নিয়ে নতুন তথ্য

১৬

ঢাকা উত্তর সিটিতে জন্মনিবন্ধন ছাড়াই টাইফয়েড টিকা মিলবে

১৭

শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারতে খালেদা জিয়া

১৮

জাতীয় পর্যায়ে রানার্স আপ নারী ফুটবল দলকে গণসংবর্ধনা

১৯

দুই বছর আগের মামলায় নতুন করে ‘আসামি’ সাংবাদিক

২০
X