ভারত সীমান্তে বাংলাদেশের সঙ্গে সড়ক পথ সংস্কার কাজের অযুহাত দেখিয়ে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য রপ্তানি বন্ধ রেখেছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। গত ৯ জুলাই অলিখিত এই ঘোষণাতে বলা হয় ১০ দিনের মধ্যে রাস্তা সংস্কার শেষে ফের চালু হবে আমদানি-রপ্তানি। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে গেলেও চালুর উদ্যোগ নেয়নি দুই দেশের কর্তৃপক্ষ।
তবে ভুটান থেকে অল্প কিছু পাথর আমদানি করলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। এ ছাড়া দুই দেশের যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক আছে। পাথর ও পণ্য আমদানি বন্ধ থাকায় বন্দরের প্রায় চার হাজার শ্রমিক মানবেতর জীনবযাপন করছেন। শত কোটি টাকার লোকশানের মুখে ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের দাবি, তাদের এলসি করা প্রায় শত কোটি টাকা আটকে আছে ভারতে। এতে সরকারও হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব।
বন্দর সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্যই বন্ধ রয়েছে পাথরসহ পণ্য রপ্তানি। ঘোষণার পর গত ১১ জুলাই থেকে রাস্তা সংস্কারের অযুহাতে এক গাড়ি পাথরও পাঠায়নি তারা। দুই দেশের ব্যবসায়ীদের আলোচনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কারণ জানতে পারলেও মূল ঘটনার বিষয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ভারত তাদের লাভের চিন্তা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। শত কোটি টাকা লস হলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দ্বিপাক্ষিক কোনো বৈঠক না হওয়ায় চলছে এই স্থবিরতা।
বন্দরের এই শংকটময় সময়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্থলবন্দর পরিদর্শনে আসেন ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ। এই সময় নাকুগাঁও স্থলবন্দরটি সম্ভবনাময় বলে উল্লেখ করলেও চালুর ব্যাপারে কোনো আশ্বাস দিতে পারেননি তিনি। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির সদস্য জাহাঙ্গীর কবির, আইবিসিসিআইর এডমিন অফিসার সঞ্জিব কুমার বালাসহ শেরপুর চেম্বার অব কমার্সের নেতারা।
স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান জুয়েল বলেন, ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের ডিপোগুলোতে পাথর শেষ হয়ে গেছে। নতুন পাথর আনতে না পারায় পাথরের বাজার অস্থির হয়ে গেছে। এ ছাড়াও আমাদের অনেক ব্যবসায়ীর এলসি করা পাথর আমরা আনতে না পারায় কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছে তারা।
এ বিষয়ে নাকুগাঁও স্থলবন্দর কর্মকর্তা পার্থ ঘোষ জানায়, সরকারিভাবে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ না হলেও ভারতীয় অংশে সড়ক সংস্কারের কাজ চলায় সেদেশের ব্যাবসায়ীরা আপাতত কিছুদিন পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা শুনেছিলাম। এর বেশি কিছু আমি জানি না। তবে যাত্রী পারাপার ও বন্দরের অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অবস্থান থেকে আমরা প্রস্তুত। ভারতীয় অংশের বিষয়ে অফিসিয়ালি আমরা কিছু জানি না। তারা কেনো পাথর পাঠাচ্ছে না এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
মন্তব্য করুন