নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগের দিন শিক্ষক শিশু শ্রেণিতে যখন ক্লাস নিয়েছিলেন তখন রুমটি খুবই পরিপাটি ছিল। সোমবার (২৯ অক্টোবর) সকালে শ্রেণিকক্ষের দরজা খুলতেই শিক্ষকের চোখ কপালে উঠে গেল। কারণ, দরজা খুলতেই চোখে পড়ে ছাদ থেকে খসে পড়েছে পলেস্তারার বড় বড় টুকরা।
জানা গেছে, স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা বিদ্যালয়টি ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। জাতীয়করণ হয় ১৯৭৩ সালে। বিদ্যালয়ে দুটি পাকা ভবন রয়েছে। একটি তিন কক্ষ এবং অপরটি দুই কক্ষবিশিষ্ট। যে ভবনের বিমের পলেস্তারা খসে পড়ছে, ওই ভবনটি ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করা হয়। ভবনটিতে রং মেখে ওপরে চকচক করে রাখলেও ভেতরের পলেস্তারার অবস্থা খুবই করুণ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তারেক উজ্জামান (কামাল) জানান, সকাল বেলা স্কুলের শিশু শ্রেণির দরজা খুলে দেখি বিমের বেশকিছু অংশের পলেস্তারা খসে ফ্লোরে পড়ে আছে। ওই শিশু শ্রেণিতে ৪৬ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাস করে। স্কুল চলাকালে ভেঙে পড়লে নিশ্চিত হতাহতের ঘটনা ঘটে যেত। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর এই ক্লাস রুমটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে নির্দেশ পেয়ে আমরা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছি। এই ভবনের অন্য কক্ষগুলোর অবস্থাও তেমন ভালো না। যেকোনো সময় একইভাবে পলেস্তারা খসে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবসময় আতঙ্কগ্রস্ত থাকেন বলেও জানান তিনি।
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, বিদ্যালয়ে সব ক্লাস মিলিয়ে ২৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অফিস কক্ষের অবস্থা ভালো না। সবসময় আতঙ্কে থাকি এই বুঝি ছাদ ভেঙে মাথায় পড়ছে। শিশু শ্রেণির কক্ষটি পরিত্যক্ত করায় আজকেই ক্লাস নিতে বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছে। শিশু আর প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে ক্লাস নিতে হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে পুরাতন ওই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণাসহ নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি খবর পেয়ে মৌখিকভাবে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছি। খুব শিগগিরই উপজেলা প্রকৌশলীকে নিয়ে পরিদর্শন করে অফিসিয়ালি পরিত্যক্ত ঘোষণা করব। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন