সাতক্ষীরার তালায় ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে কাঁচা ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ছোট বড় ও মাঝারি পর্যায়ের কৃষকরা।
এদিকে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকালে তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের মহান্দি এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, এখানকার জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, বেগুন ও মুলার চাষ করা হয়েছে। অধিকাংশ কাঁচা ফসলের জমিতে পানি জমে আছে। কৃষকরা মাঠে ফসলের জমিতে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ আলু রোপণের জন্য জমি প্রস্তুর করে রেখেছেন। অন্যদিকে বিভিন্ন সবজির বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেঁকে রেখেছেন। সেগুলোও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গ্রামের কৃষক অসীম কুমার মন্ডল, আমি পাঁচ বিঘা জমিতে বেগুনের চাষ করেছি। এভাবে যদি ২ দিন বৃষ্টি হয় তাহলে অধিকাংশ বেগুন গাছ মারা যাবে। অসময়ে বৃষ্টির কারণে বেগুন গাছে পোকার আক্রমণ হয়, গাছ ফুল ফলে পঁচন ধরে। এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করতে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়। যদি ফসল ভালো হয় এবং ভালো দাম পাওয়া যায় তাহলে বিঘাপ্রতি ১০ লাখ টাকা আয় হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আমরা বেশিরভাগ বেগুন চাষি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে।
কৃষক ইমান আলী শেখ বলেন, আমি প্রায় ২ বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছি। যদি এভাবে বৃষ্টি হয় তাহলে একটি কপিও আর বিক্রি করা যাবে না। বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার দেনা করে চাষাবাদ করেছি। সবেমাত্র ফসল বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন যদি এই ফসল নষ্ট হয়ে যায় তাহলে পথে বসে যাব।
কৃষক মোকছেদ আলী খা বলেন, অনেকেই ধান কাটা শুরু করেছেন। কিছু দিন আগে কারেন্ট পোকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এখন ধান কাঁটার সময়। এখন যদি বৃষ্টি বেশি হয় তাহলে কৃষকের অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে আমাদের মতো ক্ষুদ্র কৃষকরা পথে বসে যাব।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে কাঁচা ফলের চাষাবাদ হয়েছে। এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়নি। তবে বৃষ্টি বেশি হলে ক্ষতির পরিমাণও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মন্তব্য করুন