উত্তরের জেলা দিনাজপুর মূলত কৃষিভিত্তিক অঞ্চল। কৃষিকে কেন্দ্র করে চলে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকা। তাই সারা বছর জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে এই এলাকার চাষিরা। কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক বিপ্লব সাধনের ফলে ও আধুনিক কৃষি পদ্ধতির কারণে এক জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন করছে চাষিরা।
দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া, মোহনপুর, সাতোর, মরিচা, শতগ্রাম, ভোগনগর, সুজালপুর ইউনিয়নের কৃষকরা তাদের পতিত জমিতে একাধিক ফসল চাষ করেছেন। ফলে একই জমি থেকে বাড়তি আয় করতে পারছেন চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোগনগর ইউনিয়নের চাউলিয়া গ্রামের কৃষক মোটা সাহা এ বছর ৪০ শতক জমিতে প্রায় তিনশ কলা গাছ রোপন করেছেন। একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে ফুলকপি, বাধাকপি ও মরিচ রোপণ করেছেন।
এ বিষয়ে জানাতে চাইলে তিনি জানান, সাধারণত কলা চাষে এক বছর সময় লাগে। তাই আমি আমার জমিতে কলা গাছ রোপণ করার পর ফাঁকা জায়গায় সারি সারি ভাবে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মরিচ রোপণ করেছি। এই ফসলগুলো তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই হয়ে যাবে। পাশাপাশি কলা গাছ ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। এ বছর আমি আশা করছি যদি দাম ভালো থাকে আমার এই ক্ষেত থেকে প্রায় ৭০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করতে পারব। এটা আমার বাড়তি আয়। আর এই ফসলের আয় থেকেই কলা ক্ষেতের যাবতীয় খরচ বহন করছি এবং বছরের শেষে কলা হতে আয় হবে। যার ফলে একই জমি থেকে অধিক মুনাফা অর্জিত হচ্ছে।
একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে মোহনপুর ইউনিয়ন কৃষক সম্রাট আকবরের। তিনি এ বছর ১০০ শতক জমিতে কলা চাষ করেছেন। সেই জমিতে ফাঁকা জায়গায় অতিরিক্ত লাভের আশায় বাঁধাকপি, ফুলকপি ও আগাম জাতের আলু চাষ করেছেন। মাত্র (২০-২৫) দিন হলেই ফসলগুলো তিনি বিক্রি শুরু করবেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, বীরগঞ্জ উপজেলার মোট কৃষি জমির পরিমাণ ৩২ হাজার ৮৯৬ হেক্টর জমি। তার মধ্যে এ বছর উপজেলায় মোট ৪৬০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি ও ২০০ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি চাষ হয়েছে । উপজেলা জুড়ে প্রান্তিক কৃষকরা বাড়তি আয়ের অংশ হিসেবে একই জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ করছে। এতে তারা বেশ লাভবান হচ্ছে। বিশেষ করে যারা কলা চাষ করছে তারা একই ক্ষেতে বিভিন্ন ফসলের চাষ করছেন। পাশাপাশি কৃষকের উৎপাদিত ফসলের রোগবালাইয়ে যেন কোন ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদানে কৃষি অফিস মাঠপর্যায়ে কাজ করছে এবং কৃষকের পাশে সব সময় আছে।
মন্তব্য করুন