মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের হলুদ বর্ণের সমারোহে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠে সবে মাত্র উঁকি দিচ্ছে সদ্য ফোঁটা সরিষা গাছের হলুদ বর্ণের ফুল। আর এই সরিষা ফুলের সাথেই যেন মিশে আছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। চলতি রবি মৌসুমে সরিষা চাষে লাভের স্বপ্নে বিভোর উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক।
সম্প্রতি বাজারে ভোজ্য তেলের দাম মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির ফলে সরিষার তেলের চাহিদাও যেন অনেকাংশে বেড়ে গেছে। নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাতকরণের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিকভাবের লাভের আশা করছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে এ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে বারি-১৪ ও বারি -১৫ সহ বিভিন্ন জাতের প্রায় ১১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ আরও বাড়তে পারে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই কম বেশি সরিষার চাষ করা হয়েছে। উন্নত জাত ও দেশীয় জাতের রাই, চৈতা ও মাঘি সরিষার বীজ বপন করছেন কৃষকরা। তবে প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে উন্নত জাতের বারি-১৪ ও বারি-১৫ ফলন বেশি হওয়ায় এ দুই জাতের সরিষা চাষে বেশি আগ্রহী বলে জানান কৃষকরা।
ঝিটকা এলাকার কৃষক মনির হোসেন জানান, আমি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত গাছের অবস্থা বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, তাহলে ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। আর ফলন ভালো হলে তো অবশ্যই আমরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হব।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর সরিষার আবাদ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরিষার চাষ আরো বৃদ্ধি করার জন্য কৃষকদের সব ধরণের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। জেলা উপপরিচালক স্যারের দিক নির্দেশনায় বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ভুট্টার জমিতে, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়, ফল বাগানসহ যে কোনো পতিত জায়গায় অন্যান্য ফসলের সাথে যেন সরিষার চাষ করা হয়, এ জন্যও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির মাধ্যমে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন