সাইফুল ইসলাম, নালিতাবাড়ী (শেরপুর)
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:০৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

৫২ বছর পরও অরক্ষিত নাকুগাঁও বধ্যভূমি

সংরক্ষণ না করায় বোঝার উপায় নেই এখানে রয়েছে শহীদদের গণকবর। ছবি : কালবেলা
সংরক্ষণ না করায় বোঝার উপায় নেই এখানে রয়েছে শহীদদের গণকবর। ছবি : কালবেলা

স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও সংরক্ষণ করা হয়নি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও এলাকার নাকুগাঁও বধ্যভূমি। অযত্ম-অবহেলায় পড়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এ গণকবরটি। যুদ্ধে এ স্থানে নিহত ভারতের ৯ জন বিএসএফ সদস্যের স্মরণে সীমানার কাঁটাতার ঘেঁষে স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের ৫০-৬০ জনের গণকবরটি আজও সংরক্ষণ করা হয়নি। ভারত-বাংলাদেশ শূন্য রেখায় ভোগাই নদের তীরঘেঁষা ২০ শতাংশ জায়গাজুড়ে এ বধ্যভূমি। গণকবরটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে নাকুগাঁও স্থলবন্দর হয়ে এ দেশের কয়েক শতাধিক পরিবার নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলার সীমান্তবর্তী ডালু বাজার, বারাঙ্গাপাড়া, চান্দুভুঁই, মাছাংপানি, ছৈপানি, ডিমলারপাড়া এলাকার মন্দির, সড়ক ও গাছতলায় আশ্রয় নেন। ২৫ মে পাকিস্তানি হানাদারদের একটি বড় দল ভোগাই নদী পার হয়ে ভারতের ডাল বিএসএফ ক্যাম্পসহ প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলে। বিএসএফের প্রতিরোধ সত্ত্বেও হানাদারদের এক ঘণ্টার তাণ্ডবে ৯ জন বিএসএফ সদস্যসহ শতাধিক বাংলাদেশি নিহত হন।

ওই দিন নিহত অনেকের লাশ ভোগাই নদের স্রোতে ভেসে যায়। বাকি ৫০-৬০ জনের মরদেহ নাকুগাঁও শূন্য রেখার কাছে গণকবর দেওয়া হয়। আর বিএসএফ সদস্যদের ভারতের মাটিতে সৎকার করা হয়।

সেই যুদ্ধে নিহত ভারতের ৯ জন বিএসএফের স্মরণে সীমানার কাঁটা তার ঘেঁষে স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও বাংলাদেশের গণকবরটি আজও সংরক্ষণ করা হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নাকুঁগাওয়ের গণকবরটি অরক্ষিত। কেউ দেখিয়ে না দিলে গণকবরটি বোঝা বা চেনা সম্ভব নয়। সংরক্ষণ না করায় সেখানে খড় শুকানো হয়। আশপাশে চাষাবাদের কাজ করছেন স্থানীয়রা। কিন্তু সীমানার কাঁটাতার ঘেঁষে ভারতের তৈরি স্মৃতিফলক মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। অথচ কয়েক গজ দূরে বাংলাদেশ অংশে থাকা নাকুগাঁও গণকবরটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পড়ে আছে।

সেই দিনের সাক্ষী পৌরশহরের বাসিন্দা বিভা রানি দে বলেন, ওই দিনের গণহত্যায় আমার স্বামীসহ পাকিস্তানি বাহিনী নির্বিচারে অনেককে হত্যা করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও গণকবরটি এখনও সংরক্ষণ করা হয়নি। সংরক্ষণ করা হলে এই গণহত্যার কথা মানুষ জানতে পারত। আমরা চাই গণকবরটি সংরক্ষণ করা হোক।

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলিশায় রিছিল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত ওই নাকুগাঁও বধ্যভূমির জায়গাটি পরিদর্শন করেছি। আন্তর্জাতিক আইনে নোম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় কোনো স্থাপনা নির্মাণ করার অনুমতি নেই। তারপরও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় ওই স্থানের পাশেই স্মৃতিফলক নির্মাণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তোপের মুখে স্বাধীন খসরু

দুটির বদলে একটি মিষ্টি পেয়ে মন্ত্রীকে ফোন, অতঃপর...

টানা ১০ দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

জাহান্নামের দরজা শিগগির খুলবে : ইসরায়েল

আ.লীগ কর্মীর বাড়িতে মিলল যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ 

ক্রিকেট ইতিহাসে এই রেকর্ড করতে পারেনি আগে কেউ

সিনেমা বানিয়ে তাক লাগাতে চান জয়

জাতীয় দলেও নেই, ক্লাবেও নেই—গারনাচোর ভবিষ্যৎ অন্ধকার

বৈরী আবহাওয়াও আটকাতে পারেনি তাদের

দেয়াল টপকে সংসদে ঢোকার চেষ্টা, অভিযুক্ত আটক

১০

উদ্বোধনের পরদিনই ৯২৫ কোটি টাকার সেতু থেকে ল্যাম্পপোস্টের তার চুরি

১১

বাড়ল আকরিক লোহার দাম 

১২

মেলবোর্ন স্টেডিয়ামে বিপিএল খেলা পাক ক্রিকেটারের নামে স্ট্যান্ড

১৩

কাঁচা মাছ চিবিয়ে খান তিনি

১৪

যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী বহুমাত্রিক যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

১৫

পারমাণবিক অস্ত্রাগার উন্নত করছে চীন, নেপথ্যে কী?

১৬

কিউবা মিচেল-তপুদের দায়িত্বে আর্জেন্টাইন কোচ

১৭

গোপনে বিয়ে করলেন জিয়া মানেক

১৮

উপদেষ্টা মাহফুজের বাবা ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক নির্বাচিত 

১৯

রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে একই পরিবারের দগ্ধ ৩

২০
X