জয়পুরহাট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে উলুধ্বনি ও শঙ্খ বাজিয়ে ডালা সাজিয়ে বরণ করে নিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এ দৃশ্য দেখা যায় জেলার ক্ষেতলাল উপজেলায়। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে প্রতিদিনের ন্যায় ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নে তিনি জনসংযোগে এলে তাকে এভাবে বরণ করে নেওয়া হয়।
উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নে অন্যান্য ইউনিয়নের তুলনায় বেশিসংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসবাস। এ ইউনিয়নের ধাতালীপুর গ্রামে গণসংযোগ শেষে ছোটতারা গ্রামে গণসংযোগ চলাকালীন হিন্দুপাড়ায় প্রবেশ করলে দেখা যায় এ দৃশ্য। সাধারণত হিন্দু গৃহবধূরা পূজাপার্বণ বা বিয়ের অনুষ্ঠানে উলুধ্বনি দিয়ে থাকেন। কিন্তু নৌকার প্রার্থী আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে উলুধ্বনি দিতে শুরু করেন ওই গ্রামের হিন্দু গৃহবধূরা।
উলুধ্বনির সঙ্গে ফুল ছিটিয়েও দিচ্ছিলেন কেউ কেউ। পিছিয়ে ছিল না বয়স্করা, তারা হাতে ফুল নিয়ে স্বপনের মাথায় দিয়ে আশীর্বাদ করছিলেন। আর কয়েকজন পুরুষ ও বাচ্চাকে দেখা যায় তার গলায় মালা পরিয়ে দিতে। কেউ কেউ আবার নৌকার এ প্রার্থীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণামও করেন।
শেষে তাদের পাড়ায় তৈরি করা নৌকার ক্যাম্পে বসতে দেন এ প্রার্থীকে। তারপর তাকে উপস্থিত সবার উদ্দেশে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করলে তিনি ভাষণ দেন।
এ সময় আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, মায়ের কাছে মাসির গল্প করে লাভ নেই। আমি জানি এবং বিশ্বাস করি আপনারা ভোট দেবেন। এখানে এসে আপনাদের রাস্তাও দেখা হলো, আপনাদের সঙ্গেও দেখাও হলো। সব দেখে গেলাম ৭ তরিখের পর বাকিটা আমার দায়িত্ব। আপনাদের পাড়ার মধ্যে কোথায় কী সমস্যা আছে তার একটা তালিকা করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে আমার কাছে পাঠাবেন।
এরপর ইউনিয়নের নওটিকা গ্রামের হিন্দুপাড়ায় গেলে সেখানে দেখা যায়, কয়েকজন হিন্দু গৃহবধূ উলুধ্বনি দিয়ে শঙ্খ বাজিয়ে বরণ ডালায় প্রদীপ জ্বালিয়ে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ স্বপনকে বরণ করে নেন। এ সময় একজন তাকে ফুলের মালা পরিয়ে দিয়ে মিষ্টিমুখ করান তাকে।
এমন দৃশ্য শুধু ছোটতারা বা নওটিকা গ্রামের নয়। এ ইউনিয়নের ভূতপাড়া, কর্ণপাড়া ও বড়তারা গ্রামের হিন্দুপাড়াতেও দেখা গেছে একই দৃশ্য।
এ আসনে মোট আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমান সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর (কাঁচি), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আবু সাইদ নুরুল্লাহ (লাঙল), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের আবুল খায়ের মো. সাখাওয়াত হোসেন (মশাল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. আবু সাইদ (আম), বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. নয়ন (ডাব), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আতোয়ার হোসেন (ট্রাক) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুর রাজ্জাক সরদার (ঈগল)।
এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৯৭২ জন। ক্ষেতলাল উপজেলায় মোট ভোটার ৯৪ হাজার ১০ জন। পুরুষ ভোটার ৪৬ হাজার ৬৮৬ জন, নারী ভোটার ৪৭ হাজার ৩২৩ জন এবং হিজরা ভোটার রয়েছেন একজন।
মন্তব্য করুন