দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনায় ২৬ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রদত্ত মোট ভোটের আট ভাগের এক ভাগের কম কোনো প্রার্থী পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এই ২৬ জন প্রার্থী ওই পরিমাণ ভোটও পাননি। পাবনা-১ ও পাবনা-৩ আসনে মাত্র দুজন প্রার্থী তাদের জামানত ফেরৎ পাচ্ছেন। এরা দুজনই সতন্ত্র প্রার্থী। ট্রাক প্রতীকের এই দুজন হলেন- সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ এবং আব্দুল হামিদ মাস্টার।
সোমবার (৮ জানুযারি) নির্বাচন অফিস কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পাবনার ৫টি আসনে এবার নির্বাচনে ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এই পাঁচ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩১ হাজার ৬১৬ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৬১৮টি। মোট প্রার্থী ছয়জন। ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু (আওয়ামী লীগ, প্রতীক নৌকা) ভোট পেয়েছেন ৯৪ হাজার ৩১৪টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ (স্বতন্ত্র, প্রতীক ট্রাক) ভোট পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৮৭টি। অন্যান্য প্রার্থীরা শামসুল হক (ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি, এনপিপি, প্রতীক আম) ভোট পেয়েছেন ২৭৭টি, পারভীন খাতুন (জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল-জাসদ, প্রতীক মশাল) ১৯০টি, জয়নাল আবেদীন (তৃণমুল বিএনপি, প্রতিক সোনালি আঁশ) ভোট পেয়েছেন ৪০১টি, সরদার শাহাজাহান (জাতীয় পার্টি, প্রতীক লাঙ্গল) ভেট পেয়েছেন ৩৭৬টি, এই আসনে ভোট বাতিল হয়েছে ২ হাজার ৬৭৩টি। এই আসনে শুধু অধ্যাপক আবু সাইয়িদ (স্বতন্ত্র, প্রতীক ট্রাক) জামানত ফেরৎ পাচ্ছেন।
পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়া)। মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৮ হাজার ২০৯ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৮টি। মোট প্রার্থী আটজন। আহমেদ ফিরোজ কবির (আওয়ামী লীগ, প্রতীক নৌকা) পেয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৮৪২টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ডলি সায়ন্তনী (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম, প্রতীক নোঙর) পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৮২ ভোট। আব্দুল আজিজ খান (স্বতন্ত্র, প্রতীক ঈগল) ২ হাজার ১৩, মোমিনুল ইসলাম (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বিটিএফ, প্রতীক ফুলের মালা) ৩৬৬টি। মেহেদী হাসান রুবেল (জাতীয় পার্টি, প্রতীক লাঙ্গল) ২ হাজার ২২টি। আবুল কালাম আজাদ (তৃণমূল বিএনপি, প্রতীক সোনালি আঁশ) ৪০৪টি। শেখ আনিসুজ্জামান (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, প্রতীক মশাল) ২৮১টি। আজিজুল হক (ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি, এনপিপি, প্রতীক আম) ৩৬৬টি ভোট পেয়েছেন। এ আসনে কেউ জামানত ফেরৎ পাচ্ছে না।
পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর)। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৭৭১ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার ৬৪৭টি। প্রার্থী ৮ জন। এই আসনে মকবুল হোসেন (আওয়ামী লীগ, প্রতীক নৌকা) ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, আব্দুল হামিদ (স্বতন্ত্র, প্রতীক ট্রাক) পেয়েছেন ১ লাখ ১৫৯টি ভোট। মীর নাদিম মোহাম্মদ ডাবলু (জাতীয় পার্টি, প্রতীক লাঙ্গল) ৭৩২টি। আজিজুল হক (বাংলাদেশ কংগ্রেস, প্রতীক ডাব) ২৫১টি। আবুল বাশার শেখ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, প্রতীক মশাল) ১৭৫টি। বেল্লাল মোল্লা (ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি, এনপিপি, প্রতীক আম) ৪৩০টি। মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী (বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি, বিএসপি, প্রতীক একতারা) ৪১২টি ভোট পেয়েছেন। এই আসনে আব্দুল হামিদ মাষ্টার (স্বতন্ত্র, প্রতীক ট্রাক) ছাড়া সবাই জামানত হারাচ্ছেন।
পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া)। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১০ হাজার ২৩১ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার ৯৫৬টি । মোট প্রার্থী ৬ জন। গালিবুর রহমান শরীফ (আওয়ামী লীগ, প্রতীক নৌকা) ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪৪৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস-(স্বতন্ত্র, প্রতীক ঈগল) ১৪ হাজার ৬৬২টি, রেজাউল করিম (জাতীয় পার্টি, প্রতীক লাঙ্গল) ১৫৩৩টি, আব্দুল খালেক (বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, প্রতীক মশাল) ১০৬০টি, আতাউল হাসান (কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, প্রতীক গামছা) ৮২৬টি, মনছুর রহমান (ন্যাশনাল পিপলস্ পাটি, এনপিপি, প্রতীক আম) ৭৮৭টি ভোট পেয়েছেন। এই আসনে সবাই জামানত হাড়াচ্ছেন।
পাবনা-৫ (পাবনা সদর)। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৪৬২ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ২৫৫টি । মোট প্রার্থী ৫ জন। এই আসনে গোলাম ফারুক প্রিন্স (আওয়ামী লীগ, প্রতীক নৌকা) ১ লাখ ৫৭ হাজার ২৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাকির হোসেন (বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টি, প্রতীক হাতুড়ি) পেয়েছেন ৩৩১৬ ভোট। আব্দুল কাদের খান (জাতীয় পার্টি, প্রতীক লাঙ্গল) ২৭৬৬টি, আফজাল হোসেন বটু (তৃণমুল বিএনপি, প্রতীক সোনালি আঁশ) ৩২৫৯টি, আবু দাউদ (ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি, এনপিপি, প্রতীক আম) ১৫৫৪ ভোট পেয়েছেন। এই আসনেও সবাই জামানত হারাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন