চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ভুল চিকিৎসা দেওয়ায় একটি গাভি ও ওকটি এড়ে গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ৩টার দিকে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নারাণয়পুর পশ্চিম পাড়ার মো. ইদ্রিস আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, পৌরসভার নারায়ণপুর গ্রামের হতদরিদ্র ইদ্রিস আলী গত ১৪ বছর ধরে বিছানাগত এবং তার স্ত্রী মোছা. আকলিমা বেগম একটি গাভি ও একটি এড়ে গরু দীর্ঘদিন ধরে লালন পালন করেন। গাভির দুধ বিক্রি করে তাদের সংসার, চিকিৎসা ও ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের লেখাপড়ার খরচ বহন করে কোনো রকম টেনেটুনে চলতেন তারা। গত দুই-তিন দিন আগে গরু দুটো অসুস্থ হলে পল্লী পশু চিকিৎসক ফরিদকে খবর দেওয়া হয়। তিনি সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৪-৫টি ইনজেকশন গরুর দেহে দেন। পরে কিছু ওষুধ লিখে তিনি চলে যান। রাত পার হলে সকালে গরু দুটো কাঁপতে থাকে তখন চিকিৎসকে আবারও ফোন দিলে তিনি কোনো খাবার না দেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে দুপুরের দিকে গরু দুটি মাটিতে পড়ে যায় এবং মারা যায়। এতে দরিদ্র গাভি মালিকের স্ত্রীর আহাজারিতে বাড়ির আশপাশ ভারী হয়ে যায়।
ভুক্তভোগী আকলিমা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ইনজেকশন দেওয়ার পর থেকেই গরু দুটো কাঁপতে থাকে। যত সময় পার হচ্ছিল তত কাঁপনি ধরে আমার সম্বল গরুগুলো মরে গেল। আমার গরুগুলোকে ভুল চিকিৎসা করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার গরুগুলোর মূল্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ হবে। আমি এখন নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমাদের গরু ভুল চিকিৎসায়ই মারা গেছে। আমি এর বিচার চাই।
অভিযোগ অস্বীকার করে চিকিৎসক ফরিদ বলেন, আমি একজন পল্লী চিকিৎসক। গরুগুলোর এঁচো হওয়ায় সোমবার বিকেলে কিছু ওষুধ ও ৩টির মতো ইনজেকশন পুশ করি। এটি দেওয়ার পর গরু স্বাভাবিক ছিল। আজ দুপুরের জানানো হয়, গরুগুলো মারা গেছে। আমি যদি ভুল চিকিৎসাই দেব তাহলে একদিন পর কেন মারা যাবে। হয় তখনই বা এক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যেত। একদিন পর তো মারা যেত না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ দিলে তদন্ত করা হবে। তদন্তে ভুল চিকিৎসার প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন