ভূমি জটিলতার কারণে ৫৩ বছরেও লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উত্তর চরবংশী, উত্তর চর আবাবিল ও সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ হয়নি। বর্তমানে ৩টি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। এতে সেবা নিতে এসে ঝুঁকিতে থাকতে হয় জনগণকে। ২০২১-২২ সালে ৭টিতে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন হয়েছে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সরেজমিন দেখা গেছে, রায়পুরের উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ছাদের আস্তরণ ভেঙে পড়ছে। দেয়াল ফেটে পরগাছা হয়। একই অবস্থা বিরাজ করছে উত্তর চরআবাবিল ও সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে। আতংক নিয়ে সকল কার্যক্রম করছেন সচিব ও জনপ্রতিনিধিরা।
উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের রাসেদ খলিফা বলেন, দীর্ঘদিন ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব ভূমি ও কমপ্লেক্সে ভবন না থাকায় জনসাধারণকে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। মেঘনা উপকূলীয় বিশাল শস্য ভাণ্ডার এলাকা খাসেরহাটে জরাজীর্ণ ইউপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সাধারণ মানুষকে সেবা নিতে হচ্ছে। খুব দ্রুত ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন করে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করা দরকার। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, পরিষদের নিজস্ব কোনো জমি নেই। ১৯২৮ সালে প্রতিষ্ঠা ও ১৯৮৮ সালে একতলা ভবনটি নির্মাণ করা হয়। আমি দুবারসহ ১২ চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করেছে। বর্তমান ভবনটি (তহসিল সম্পত্তি) মালিকানাধীন জমিতে রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্য ২৫ শতক জমির প্রয়োজন। পর্যাপ্ত জমি না থাকায় ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কয়েকবার জেলা প্রশাসক, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়। কেউ বিষয়টি নিয়ে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ করার ঘোষণা দিতে ২০১২ সালে আইনশৃঙ্খলা কমিটির প্রথম সভায় বলা হয়। তা ছাড়া প্রতি শনিবার ওই কার্যালয়ে পরিষদের কাজ হয়। ভবনটি দিন দিন আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
উত্তর চরআবাবিল ইউপি চেয়ারম্যান জাফর উল্লা দুলাল হাওলাদার বলেন, ১৯৭৩ সালে পরিষদ কার্যক্রম শুরু হয় ও ১৯৭৯ সালে ভবন করা হয়। ২৫ শতাংশ জমির মধ্যে আছে ১৫ শতাংশ। আমিসহ ছয়জন চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করে। একাধিবার প্রশাসনকে বলার পরেও নতুন ভবন করা হচ্ছে না।
সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ জালাল কিসমত বলেন, কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্য ২৫ শতক জমি প্রয়োজন। আমাদের আছে মাত্র তিন শতাংশ জমি। জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ১৯৭২ সালে এই ভবন নির্মাণ করা হয়। আমি দুইবারসহ ১১ জন চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করেন। একাধিকবার পদক্ষেপ নিয়েছি। জমি স্বল্পতার কারণে কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে মাছ বাজারের জন্য তার পাশেই নতুন ভবন উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা বিনতে আমিন বলেন, ‘কয়েক দিন আগে যোগদান করেছি। পর্যাপ্ত পরিমাণে জমি না থাকার বিষয়ে উত্তর চরবংশী, উত্তর চরআবাবিল ও সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কথা বলব।
মন্তব্য করুন