পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে যানবাহনসহ মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধা উদ্ধারে নারায়ণগঞ্জ থেকে ‘প্রত্যয়’ নামের আরেকটি উদ্ধারকারী জাহাজ ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। বিকেল ৫টার দিকে জাহাজটির ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
বৃহস্পৃতিবার (১৮ জানুয়ারি) পাটুরিয়ায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের পরিচালক মো. শাহ জাহান এ তথ্য জানান।
এদিকে উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম। ইতোমধ্যে ফেরির তৃতীয় ট্রাকটি উদ্ধারে ব্যস্ত উদ্ধারকারী জাহাজ রস্তুম। তবে ফেরিডুবির ঘটনায় ইঞ্জিনের দ্বিতীয় মাস্টার হুমায়ুন কবির এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডুবে যাওয়া রজনীগন্ধা উদ্ধারে সক্ষমতা নেই হামজা ও রুস্তমের। কারণ ডুবন্ত ফেরিটির ওজন ২৫০ টনের বেশি। অপরদিকে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তমের সক্ষমতা প্রতিটির ৬০ টন করে। তবে রওনা হওয়া প্রত্যয়ের সক্ষমতা ২৫০ টন। সেক্ষেত্রে তিন জাহাজ একত্রে চেষ্টা করলে ডুবে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধার করা সম্ভব।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি), মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত ১২টার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি রজনীগন্ধা। ফেরিতে ৯টি মালবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ছিল। রাত দেড়টার দিকে ঘনকুয়াশার কারণে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের অদূরে পদ্মা নদীতে আটকে পড়ে ফেরিটি। এ সময় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। গতকাল সকাল ৮টার দিকে ফেরিটি ডুবে যেতে থাকে। এ সময় যানবাহনের চালক, সহকারী ও ফেরিতে কর্মরত লোকজন দ্রুত নদীতে ঝাঁপ দেন। পরে তাদের কেউ কেউ সাঁতরে নদীর তীরে ওঠেন। এ ছাড়া স্থানীয় লোকজন ট্রলার নিয়ে বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে তীরে নিয়ে আসেন। এর একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফেরিটি পুরোপুরি ডুবে যায়।
খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ, নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দুপুর ১২টার দিকে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ঘটনাস্থলে আসে।
নৌপুলিশের ফরিদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ফেরিটি দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাটে আসার পথে ডুবোচরে ধাক্কা লাগে। এতে ফেরির তলা ফুটো হয়ে গেলে পানি ঢুকতে থাকে। কুয়াশায় পথ দেখতে না পেয়ে পাটুরিয়া ঘাটের ২০০ থেকে ২৫০ গজ অদূরে রজনীগন্ধা ফেরিটি নোঙর করে। এরপর ধীরে ধীরে পানি ঢুকে ৯টি ট্রাকসহ ফেরিটি ডুবে যায়। এ পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ফেরি থেকে ২০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ফেরির দ্বিতীয় ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ুন এখনো নিখোঁজ।
অবশ্য বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানিয়েছেন, নোঙর করে থাকা ফেরি রজনীগন্ধাকে বালুবাহী বাল্কহেড ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এতে ফেরিটি ডুবে যায়। তবে ঘনকুয়াশার কারণে ধাক্কা দেওয়া বাল্কহেডটি শনাক্ত করা যায়নি।
মন্তব্য করুন