সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বান্দরবানের পাহাড়ে জেঁকে বসেছে শীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন স্থানীয়রা। ছবি : কালবেলা
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন স্থানীয়রা। ছবি : কালবেলা

পাহাড়ে পাহাড়ে জেঁকে বসেছে শীত। ঘনকুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে পাহাড়ি জনপদ। বান্দরবানের সীমান্তবর্তী উপজেলা নাইক্ষ্যংছড়ি দুর্গম এলাকার পাহাড়ে পাহাড়ে পুরোদমে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। দুর্গম পাহাড়ের বেশিরভাগ মানুষেরই দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস। তাই এই শীতের শুরুতেই গরম কাপড়ের অভাবে থর থর করে কাঁপছে হতদরিদ্র পাহাড়ি জনপদের মানুষ। তা ছাড়া গত এক সপ্তাহ ধরে জেলাজুড়ে ঘনকুয়াশায় ঢাকা পড়েছে চারপাশ। একই সঙ্গে বয়ে আসা পাহাড়ি হিম বাতাসে জনজীবনে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

বান্দরবান প্রথম শ্রেণির আবাহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) জেলায় সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ২ এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তা ছাড়া দুদিন পর চট্টগ্রাম বিভাগের তিন পার্বত্যঞ্চলে শীত বাড়ানো পাশপাশি গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর আগে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বান্দরবানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ছিল ২২ দশমিক ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জেলার বিভিন্ন দুর্গম এলাকার ঘুরে দেখা গেছে, সোনাইছড়ি, ঘুমঘুম, দোছড়ি, বাইশারী, নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের ফুল তলি, আছারতলীতে সন্ধ্যায় হলে এসব এলাকায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘনকুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের ফলে শীতে কাঁপছে এসব দুর্গম এলাকার পাহাড়ি জনপদের মানুষ। সকাল-সন্ধ্যায় বাড়ি-বাড়ি আগুন জ্বালিয়ে হতদরিদ্র মানুষ শীত নিবারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আগুনে পোহাচ্ছেন সকল বয়সের মানুষ। দিনের বেলা প্রয়োজনীয় কাজ শেষে অনেকেই নিজ বাড়িতে ফিরছেন। কেউবা ছেড়া কাঁথা মুড়িয়ে প্রচণ্ড শীতে থর থর করে কাঁপছে। এ বছর শীতের তীব্রতা বেশি হওয়ায় সবচেয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হতদরিদ্র মানুষ। এতে রাতে ও সকালে মানুষের উপস্থিতি অনেক কম দেখা গেছে।

বাইশারী বাজারে শীত কাপড় ব্যবসায়ী আবুল কাসেম বলেন, এবার নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রচুর শীত পড়ছে। যার কারণের সাধারণ মানুষ শীতের পোশাকসহ বিভিন্ন কিছু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। যেমন শীত বাড়ছে তেমন বিক্রিও ভালো হচ্ছে।

তুমব্রু সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা জানান, তীব্র শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কনকনে ঠান্ডায় চরম অসহায় হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে গোটা পাহাড়ের মানুষ। তীব্র শীতে কাজে যেতে পারছে না নিম্নবিত্ত ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। হতদরিদ্র মানুষ শীত মোকাবিলায় চরমভাবে হিমশিম খেলেও কেউ এগিয়ে আসছেন না।

চড়ই ম্রো পাড়ার বাসিন্দা নামলে ম্রো জানান, সকাল হলে শীতের কুয়াশায় রাস্তা দেখা যায় না। তাছাড়া ভোরে আগুনে পোহাতে হয় সবাই মিলে। প্রচুর শীত পড়ার কারণের কাজকর্ম করা যাচ্ছে না।

উপজাতীয় নেতা উলাফ চাক জানান, তীব্র শীতে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী ও পাহাড়ে বসবাসরত লোকজনের মাঝে কম্বল বিতরণ জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই বিত্তবানদের অসহায় দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান তার।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক (শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ) আবু জাফর মোহাম্মদ সেলিম বলেন, শীতজনিত কারণে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি।

এদিকে দুঃস্থ ও শ্রমজীবী মানুষজনের শীতের কষ্ট লাঘবে গরম কাপড় ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসতে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল।

বান্দরবানের প্রথম শ্রেণির আবাহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল বলেন, বর্তমানে যে শীত পড়ছে সেটি আরও কয়েক দিন বাড়তে পারে। রাতে কিংবা সকালে তাপমাত্রা এক হতে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি পার্বত্যাঞ্চলে হালকা কিংবা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপি নেতা আব্দুস সালামের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন ডা. কাঁকন 

সিপিএলে ইতিহাস গড়ে ফ্যালকনসকে জেতালেন সাকিব

নতুন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন / মাত্র ১০০ টাকায় করা যাবে দক্ষতা, চাকরি কিংবা ভর্তি প্রস্তুতির কোর্স

সড়কের মাঝখানে গাছ রেখেই ঢালাই সম্পন্ন 

বুটেক্স সাংবাদিক সমিতির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

টানা ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ জবির ভিসি

৬৪ জেলার নেতাকর্মীদের নতুন বার্তা দিল এনসিপি

ম্যানইউর জয়হীন ধারা অব্যাহত, এবার ফুলহামের মাঠে ড্র

ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা-পেশাজীবীদের নিয়ে ‘আগামীর পথ’ অনুষ্ঠিত

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের অনন্য কীর্তি

১০

জুলাই যোদ্ধা শহীদ তানভীরের চাচা খুন

১১

ভরা জোয়ারে ডুবে যায় বিদ্যালয়, শঙ্কায় অভিভাবক-শিক্ষার্থী

১২

যেভাবে গ্রেপ্তার হলেন তৌহিদ আফ্রিদি

১৩

তারের পর এবার চুরি হলো সেতুর রিফ্লেক্টর লাইট

১৪

‘এবার আমাদের পালা’ স্বরূপ আচরণ উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে : টিআইবি

১৫

ভূমি অধিগ্রহণে আটকে আছে ইউলুপ, ইউটার্নে মরছে মানুষ!

১৬

কনে দেখতে যাওয়ার পথে নৌকাডুবি : নিখোঁজ দুজনের মরদেহ উদ্ধার

১৭

থাইল্যান্ডের ক্লাবে আবার ভাইরাল ‘কাঁচা বাদাম গার্ল’ অঞ্জলি

১৮

চাকসুতে সমকামিতা সমর্থক ও মাদকাসক্তদের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি

১৯

ঠাকুরগাঁওয়ের মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১

২০
X