ডেমরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৫৪ পিএম
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

২১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও লিবিয়ায় বন্দি সুজন

লিবিয়ার মানচিত্র। ছবি : সংগৃহীত
লিবিয়ার মানচিত্র। ছবি : সংগৃহীত

ইতালি যাওয়ার প্রলোভনে দালালদের খপ্পরে পরে লিবিয়ায় বন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন পার করছেন মো. সুজন হাওলাদার নামের এক যুবক। ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও দালালচক্র তাকে ইতালি না পাঠিয়ে লিবিয়ার একটি আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তেরো লাখ টাকায় ইতালি নিয়ে যাবে এমন লোভনীয় অফারে দালাল চক্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় সুজন। প্রথম কিস্তিতে চুক্তির ১০ লাখ টাকাও দেয় সে। গত বছর ১০ জুলাই সুজনকে ইতালি নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানায় চক্রটি। চুক্তির বাকি ৩ লাখ টাকা ইতালি যাওয়ার পরে দেওয়া হবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার আলমস নামের একটি রেস্টুরেন্টে বসে এমন শর্তে লেনদেন করা হয়। পরে ২০২৩ সালের ১০ জুলাই সুজনকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ২০ অক্টোবর লিবিয়ার একটি আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে সুজনকে জীবিত ফিরে পেতে আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা।

এ বিষয়ে সুজনের শ্বশুর এমদাদ হোসেন পেদা বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ডেমরা থানায় অভিযুক্ত ৫ জন মানব পাচারকারীসহ অজ্ঞাত ৩ থেকে ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন- মাদারীপুরের কালকিনি থানার উত্তর উড়ার চর গ্রামের রাজ্জাক সরদারের ছেলে মো. এনামুল (৩২), একই জেলার সরদার আল মুবিন (৩০), ডাচ বাংলা ব্যাংক লি. এজেন্ট শাখার স্বত্বাধিকারী লিপি, বিকাশ নম্বরের স্বত্বাধিকারী ও মেসার্স কাপাসিয়া কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী হাফেজ আব্দুল মোক্তার মোল্লা।

এ বিষয়ে সুজন হাওলাদারের শ্বশুর বলেন, আমার মেয়ের জামাতা মো. সুজন হাওলাদারকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা। তাদের সাথে আমরা সেভাবেই লেনদেন করেছি। পরে গত বছর ২০ অক্টোবর দুবাইগামী একটি বিমানে করে তাকে ইতালির উদ্দেশে পাঠানো হয়। কিন্তু পরে জানা যায়, সুজন ইতালি যায়নি। পরে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আমার ইমো নাম্বারে ভিডিও কল করে দালাল চক্রের সরদার আল মুমিন। এ সময় সে জানায়, লিবিয়ায় সুমনকে আটকে রাখা হয়েছে। তাকে জীবিত পেতে হলে আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দিতে হবে, না হলে তারা সুমনকে মেরে ফেলবে। এ সময় তারা আমার মেয়ের জামাতাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের ভিডিও সরাসরি দেখায়। সুজনকে ফিরে পেতে তার পরিবারের লোকজন ওই দালাল চক্রকে আরও ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে পাঠালেও লিবিয়ার ওই চক্র থেকে তাকে মুক্ত করা যায়নি। মোট ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়েও আমার মেয়ের জামাতাকে আজ পর্যন্ত ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

বাদীর বরাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেমরা থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম দৈনিক কালবেলাকে বলেন, একই এলাকার বাসিন্দা লিবিয়া প্রবাসী মো. এনামুলের সঙ্গে ইতালি যাওয়ার চুক্তি করেন ভুক্তভোগী সুজন। পরে তারা সুজনকে লিবিয়ার মাফিয়া মানবপাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দেয়। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এলোপাতারি কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যা

ক্যাশমেমো নেই, খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে কাঁচামাল

রামপুরায় ভবনের ৬ তলা থেকে পড়ে রডমিস্ত্রির মৃত্যু

কুড়িয়ে পাওয়া ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিলেন ভ্যানচালক

বুড়িগঙ্গা থেকে লাশ উদ্ধার / ৪ জনকেই হত্যা করা হয়েছে, ধারণা পুলিশের

ওসির বদলির খবরে মোহাম্মদপুর থানার সামনে মিষ্টি বিতরণ স্থানীয়দের

বিএনপি নেতা আব্দুস সালামের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন ডা. কাঁকন 

সিপিএলে ইতিহাস গড়ে ফ্যালকনসকে জেতালেন সাকিব

নতুন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন / মাত্র ১০০ টাকায় করা যাবে দক্ষতা, চাকরি কিংবা ভর্তি প্রস্তুতির কোর্স

সড়কের মাঝখানে গাছ রেখেই ঢালাই সম্পন্ন 

১০

বুটেক্স সাংবাদিক সমিতির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

১১

টানা ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ জবির ভিসি

১২

৬৪ জেলার নেতাকর্মীদের নতুন বার্তা দিল এনসিপি

১৩

ম্যানইউর জয়হীন ধারা অব্যাহত, এবার ফুলহামের মাঠে ড্র

১৪

ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা-পেশাজীবীদের নিয়ে ‘আগামীর পথ’ অনুষ্ঠিত

১৫

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের অনন্য কীর্তি

১৬

জুলাই যোদ্ধা শহীদ তানভীরের চাচা খুন

১৭

ভরা জোয়ারে ডুবে যায় বিদ্যালয়, শঙ্কায় অভিভাবক-শিক্ষার্থী

১৮

যেভাবে গ্রেপ্তার হলেন তৌহিদ আফ্রিদি

১৯

তারের পর এবার চুরি হলো সেতুর রিফ্লেক্টর লাইট

২০
X