নাটোরের সিংড়ায় সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজির প্রতিবাদে দেশীয় অস্ত্র হাতে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী সিএনজি অটোরিকশা চালকরা। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে নাটোরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেলের নেতৃত্বে সেন্টুকে সভাপতি এবং রঞ্জুকে সাধারণ সম্পাদক করে সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি প্রতিদিন ২০৫টি সিএনজি অটোরিকশা চালকের কাছ থেকে প্রতি অটোরিকশা থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা আদায়ের কথা থাকলেও তারা সেখান থেকে ৪০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। এর মধ্যে ১০ টাকা সিংড়া পৌরসভা গ্রহণ করে এবং ৩০ টাকা শ্রমিক সমিতি নেয়। এ নিয়ে চালক এবং সমিতির নেতাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এরই জেরে ৫-৬ জন সিএনজি অটোরিকশা চালককে চাঁদা না দেওয়ার কারণে সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে তাদের বের করে দেয়।
পরে অপর পক্ষের লাবুর নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ চালক এবং স্থানীয়রা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গিয়ে তারা মালিক সমিতির অফিসের উপরে টাঙানো ব্যানার টেনে ছিঁড়ে নামিয়ে ফেলে। এতে আতঙ্কিত শ্রমিকরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে।
সিএনজি চালকরা জানান, সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক সমিতির অব্যাহত চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করলে কয়েকজন সিএনজি চালককে স্ট্যান্ড থেকে বের করে দেয়।
কুঞ্চি ভোদরা এলাকার সিএনজি অটোরিকশা চালক সাগর আলী বলেন, সারাদিন আমরা কষ্ট করে অটোরিকশা চালিয়ে যা রোজগার করি তার অর্ধেকই যায় সমিতির নেতাদের পেটে।
জিগাপাড়া এলাকার চালক খাইরুল ইসলাম বলেন, ২০ টাকা করে নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ৪০ টাকা করে। এ টাকা মালিক শ্রমিক কারও কল্যাণেই আসে না।
ক্ষীরপোতা এলাকার সিএনজি অটোরিকশা চালক আলামিন বলেন, ১৮ বছর ধরে সেন্টু এবং রঞ্জু এ চাঁদার টাকা নিজেরা ভোগ করে যাচ্ছে। আজকে শ্রমিক জনতা তার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
আব্দুল হামিদ নামে এক স্থানীয় জানান, মূলত অবৈধ অর্থ উপার্জনের জন্য আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ বিক্ষোভ এবং ভাঙচুরের ঘটনা।
সিংড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, বিক্ষোভ মিছিলের খবর পেয়ে পুলিশ সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এবং সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে যায়। সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়। আপাতত সিএনজিস্ট্যান্ড শান্ত রয়েছে। কোনো পক্ষ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন