ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব শ্যামপুর-চৌদ্দরশি সড়কটির সংস্কারকাজে ধীরগতিতে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এ পথে চলাচলকারী বাসিন্দারা। বিশেষ করে ব্যবসায়ীরা পণ্য আনা-নেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। সড়কে খানাখন্দ থাকায় তাদের পরিবহন খরচ বাড়তি দিতে হচ্ছে।
২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সড়কটি সংস্কারকাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসেও শেষ হয়নি এর কাজ।
সদরপুর বাজার থেকে চৌদ্দরশি মেইন রোড পর্যন্ত সড়কটি স্থানীয় বিভিন্ন পেশার ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পূর্ব শ্যামপুরবাসীর ব্যবহারের একমাত্র সড়ক এটি।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কটিতে আগের সুয়ারেজ লাইন তুলে নতুন করে কাজ করার কথা। সেই সুবাদে বছর দুয়েক আগে সড়কটি পুনঃনির্মাণের জন্য কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এরপর সড়ক সংস্কারে টানা কাজ হওয়ার কথা থাকলেও তা আর হয়নি।
এ সড়কে যাতায়াতকারী ভ্যানচালক শহিদুল বলেন, সড়কটি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভ্যানে করে বিভিন্ন ধরনের মালামাল আনা-নেওয়া করি। দুই বছরের বেশি সময় সড়কটি অর্ধেক কাজ করা অবস্থায় পড়ে থাকায় বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়। এখন মালামাল আনা-নেওয়া করতে হচ্ছে অন্য সড়ক দিয়ে। এতে মালামাল আনা-নেওয়ার সময় আমার অনেক কষ্ট করতে হয়। আবার সময় লাগে বেশি, যারা মালামাল বাজার থেকে নিয়ে আসে তাদের খরচও হয় বেশি।
হোটেল ব্যবসায়ী মো. ঈগল জানান, হোটেলের সামনের সড়ক নষ্ট থাকায় এখানে কোনো গাড়ি চলাচল করে না। ফলে আগের তুলনায় এখন অনেক কম মানুষ আমার হোটেলে খেতে আসে। এই রাস্তার কারণে ক্রেতা কম আসায় আমাদের অনেক লোকসান হচ্ছে এবং খাবার বিক্রি করতে না পেরে প্রতিদিন খাবার নষ্ট হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে এভাবে সড়কটি রয়েছে। কিন্তু কারও কোনো খেয়াল নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাব্বির খাঁন বলেন, পূর্ব শ্যামপুর এলাকাবাসীর চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি। সড়কটি আগে ভালো ছিল। কিন্তু বছর দুই আগে সংস্কার ও প্রশস্তকরণ কাজ করার জন্য সড়কটি কাটা হয়। টেন্ডার দেওয়ার মেয়াদ থেকে দুই বছর অতিবাহিত হলেও সড়কটির দিকে কারও নজর নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী জাফর বলেন, সড়কটির কাজ ইউনিয়ন পরিষদের না, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাজ। তাই আমরা এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। শুনেছি দুই বছর আগে টেন্ডার হয়েছে। কাজ একবার শুরু হয়েছিল, অনেকদিন ধরে কাজ বন্ধ আছে।
সড়কটির মেরামতকাজের টেন্ডার পাওয়া ঠিকাদার সুশিল দাস বলেন, কিছু দিন আগেও রাস্তার কাজ করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই আবার কাজ শুরু করা হবে। স্থানীয়দের সঙ্গে রাস্তার জায়গা নিয়ে সমস্যা থাকার কারণে কাজ করতে কিছু দিন সময় লেগেছে। রাস্তার পাশে কিছু গাছ ছিল, সেগুলোকেও কাটতে সময় লেগেছে। আবহাওয়া খারাপের কারণে কাজ এখন বন্ধ আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তার কাজ শেষ হবে।
এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মোমেন বলেন, সদরপুর ইউপি অফিস-১৪ রশির সড়কটি প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। রাস্তার জায়গা ও গাছকাটা নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে ঠিকাদারের একটু বিরোধ ছিল। এখন সমাধান হয়ে গেছে। ঠিকাদার মালামাল ও মেশিনপত্র জোগাড়ের কাজ করছেন। রাস্তার প্রায় সব কাজ হয়ে গেছে। শীতের কারণে কারপেটিং করতে একটু সময় লাগছে। অতি দ্রুত রাস্তাটির কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন