কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন স্থানে ১ হাজার ৭৭টি ডিম ছেড়েছে অলিভ রিডলে প্রজাতির ৯টি মা কচ্ছপ। সৈকতের বালিয়াড়িতে প্রায় দুই ফুট গর্ত করে গত এক সপ্তাহে এসব ডিম ছাড়ে কচ্ছপগুলো।
বেসরকারি সংস্থা কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার নিজেদের হ্যাচারিতে বাচ্চা ফোটানোর উদ্দেশ্যে এসব ডিম সংগ্রহ করেছে। তাদের সংগ্রহ করা ডিমের হিসেবে এ সংখ্যাটি জানা গেছে। ইউএসএআইডির অর্থায়নে পরিচালিত নেচার অ্যান্ড লাইফ প্রকল্পের মাধ্যমে সামুদ্রিক কচ্ছপের বংশ বিস্তারের এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সামুদ্রিক কচ্ছপের ডিম পাড়ার ভর মৌসুম চলছে। তাই প্রতিদিনই সামুদ্রিক অলিভ রিডলে কচ্ছপগুলো ডিম পাড়তে সাগর থেকে উপকূলে উঠে আসে। ডিম পাড়ার পর কচ্ছপগুলো আবার সাগরে ফিরে যায়। ডিম পাড়তে এসে কচ্ছপগুলো অনেক সময় কুকুরসহ অন্যান্য প্রাণীর হামলার শিকার হয়। অনেক সময় তারা আঘাতপ্রাপ্ত অথবা মারাও পড়ে। এ ছাড়া ডিমগুলোও দুষ্কৃতকারীদের থাবায় নষ্ট হয়ে যায়। গবেষকরা জানান, কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। তাই মা কচ্ছপগুলো সাগর থেকে কূলে উঠে আসছে।
নেচার অ্যান্ড লাইফ প্রকল্পের কর্মকর্তা অসীম বড়ুয়া বলেন, ২ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টেকনাফের বড় ডেইল, জাহাজপুরা, শীলখালী এবং উখিয়ার ছেপটখালী, মাদারবুনিয়া ও মনতলিয়া থেকে ৯টি মা কচ্ছপ উদ্ধার হয়। এদের গতিবিধি লক্ষ্য করে ১ হাজার ৭৭টি ডিম পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, নিরাপদ পরিবেশ না থাকায় ডিম পাড়তে এসে মা কচ্ছপের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। গত এক সপ্তাহে ডিম পাড়তে আসা ৩৫ থেকে ৪০ কেজি ওজনের কচ্ছপগুলোর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
সংগ্রহ করা ডিম থেকে ৪৫ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে বাচ্চা ফোটানো যাবে জানা গেছে। উপকূলের পাঁচটি হ্যাচারিতে বাচ্চা ফোটানোর পর তা সমুদ্রে অবমুক্ত করা হবে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মাদারবুনিয়া থেকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের খুরেরমুখ পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার সমুদ্র উপকূলের সামুদ্রিক কচ্ছপ সংরক্ষণে ২০২১ সাল থেকে নেচার অ্যান্ড লাইফ প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রম চলছে। প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছাড়াও কচ্ছপ সংরক্ষণে সরকারি, বেসরকারি সংস্থাগুলো নানা ধরনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
মন্তব্য করুন