সড়কের দুই পাশের জায়গা দখল করে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ভাসমান দোকানিরা। ফলে সড়কে গাড়ি ও মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সোনাগাজী বাজারের প্রধান সড়কের ফুটপাত ও সড়ক দখলের ফলে যানজট এখন নিত্যদিনের ভোগান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু হকার নয়, বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে সোনাগাজী বাজারের প্রধান সড়কের পাশের ফুটপাত। ফলে রাস্তায় চলতে গিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েন পথচারীরা। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে প্রশাসন একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালালেও পরে আবার দখল করে নেয় হকাররা।
সরেজমিনে সোনাগাজী বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী তাদের দোকানের সামনের ফুটপাত হকারদের নিকট দৈনিক ২-৩শ টাকায় ভাড়া দেয়। ফলে ব্যাপক যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে পৌরবাসীর। সোনাগাজী বাজারের আল-হেলাল একাডেমি থেকে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবন পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে ফুটপাত ও গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা দখল করে বিভিন্ন ফলের দোকান, কাঁচাবাজার, মাছ বাজার, ডাবের দোকান, আখমাড়াই মেশিনসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ফলে একদিকে পথচারীদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। অপরদিকে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা জবর দখল হওয়ায় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনাসহ আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী নানা ঘটনাও।
সোনাগাজী মো. ছাবের সরকারি পাইলট হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র সোহান কায়সার তিহাম কয়েকমাস আগে সোনাগাজী মাদ্রাসার সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। ঘটনাস্থলে থাকা তার সহপাঠীরা জানায়, মাদ্রাসার গেটসহ সকল ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় আমাদের বাধ্য হয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হয়। রাস্তায় চলাচল করতে গিয়েই আমাদের বন্ধু তিহাম ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খায়।
আল-হেলাল একাডেমির দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইবনে মো. তছলিম শিবলু জানান, ফুটপাতে দোকান বসার কারণে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হয়। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কিছুদিন আগে স্কুলে যাওয়ার সময় সোনাগাজী তাকিয়া রোডে বেপরোয়া গতির একটি ইজিবাইক আমার কাধের স্কুল ব্যাগটি ছিঁড়ে নিয়ে যায় এবং আমাকে টেনে নিয়ে ১০-১২ ফুট দূরে ফেলে চালক দ্রুত পালিয়ে যায়।
ফুটপাত দখল করা নিয়ে কথা হয় অস্থায়ী ফল ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের সঙ্গে। তিনি জানান, ভাই আমরা গরিব মানুষ। সবাই গরিবরে লাথি মারতে পারে। যে সকল দোকানদার আমাদের কাছ থেকে দৈনিক ১শ, ২শ, ৩শ টাকা করে নেয় তাদের বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নেয় না।
সোনাগাজী পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন নয়ন বলেন, ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোর কারণেই যানজটের সৃষ্টি হয়। ফুটপাত দখলমুক্ত করতে লোক দেখানো দু একটি অভিযান পরিচালনা করা ছাড়া যানজট নিরসনে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। একাধিকবার প্রশাসনের নিকট সহযোগিতা চেয়েও কোনো সহযোগিতা পাইনি।
সোনাগাজী বাজার বনিক সমিতির সভাপতি নুর নবী জানান, আমরা বারবার পদক্ষেপ নিই। কিন্তু কিছুই হয় না। আমি ডিসি-এসপি, ইউএনও-ওসিকে কয়েকবার বলেছি। ভ্রাম্যমাণ আদালতকে হকার ভয় পায় না। জরিমানা বেশি করলে ভয় পাবে।
সোনাগাজী পৌর মেয়র অ্যাড. রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, যানজট-ফুটপাত দখল নিয়ে কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। সমাধান কিছুই হয়নি। ট্রাফিক না থাকায় এ সমস্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, ফুটপাত দখলমুক্ত করতে একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমরা এ ব্যাপারে আরও পদক্ষেপ নেব।
মন্তব্য করুন