সিলেটের ওসমানীনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাচাতো ভাইদের হাতে আনোয়ার হোসেন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। এ সময় নারীসহ আরও ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে উছমানপুর ইউনিয়নের বেতখাই গ্রামে অতর্কিত এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত আনোয়ার হোসেন বেতখাই গ্রামের শফিকুর রহমানের ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই নুরুল হোসেন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ১৪ জনকে আসামি করে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ওসমানীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলো- বেতখাই গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে শাহিন মিয়া (৩০), একই গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সিরাজুল ইসলাম বাদশা (৫০), আব্দুল জব্বারের ছেলে আব্দুল কাদির (৫০), সিরাজুল ইসলাম বাদশার স্ত্রী সুলতানা বেগম (৩৩), আব্দুল গণির স্ত্রী আফিয়া বেগম (৪০) ও আব্দুল কাদিরের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪৫)।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জায়গা ও সম্পত্তি নিয়ে জিলু মিয়া ও আনোয়ার হোসেন গংদের সাথে একই বাড়ির চাচাতো ভাই গণি মিয়া, বাদশা মিয়া, কাদির মিয়া ও শাহিন মিয়া গংদের সাথে বিরোধ চলছিল।
গত শুক্রবার জিলু মিয়া তার মেয়ের কবর জিয়ারত করে প্রতিপক্ষের ঘরের সামনে দিয়ে আসার সময় তাকে মারধর করা হয়।
বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য রোববার দিন তারিখ ধার্য করেন। এর আগেই শনিবার সকাল ৮টায় রামদাসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জিলু মিয়া ও আনোয়ার হোসেন গংদের ঘরে হামলা চালায় তারা।
এ সময় অনেকেই ঘুমিয়ে ছিলেন। হামলাকারীরা তাদের ঘর-দরজা ভাঙচুর করে নারী-পুরুষকে টেনে বাইরে বের করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।
হামলায় আহতরা হলেন- জিলু মিয়া, তার স্ত্রী হেনা বেগম, ছেলে রাসেল মিয়া, জাকির মিয়ার ছেলে মাহিদ ও নুরুল, ঝুনু মিয়ার স্ত্রী মমতা বেগম, শফিক মিয়ার মেয়ে হাছনা বেগম ও নাজমা বেগম।
এ সময় হামলাকারীরা রাসেলের পায়ুপথ দিয়ে লোহার রডও ঢুকিয়ে দেয়। হামলার সময় আনোয়ার হোসেন গরু চড়াতে বাড়ির পাশেই মাঠে ছিলেন। প্রতিপক্ষরা সেখানে গিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়।
পরে আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আনোয়ার হোসেন মারা যান। এছাড়া আহত রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
নিহত আনোয়ার হোসেনের চাচাতো বোন তাহমিনা বেগম বলেন, সুমন মিয়া, বাদশা মিয়া, গণি মিয়া, শাহিন মিয়া ও কাদির মিয়া গংরা রামদাসহ অস্ত্র নিয়ে সকাল ৮টায় দরজা ভাঙচুর করে ঘরে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমার চাচাতো ভাই আনোয়ার হোসেন বাড়ির পাশের মাঠে গরু নিয়ে গিয়েছিল। হামলাকারীরা সেখানে গিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক হত্যাকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত এজাহারনামীয় ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন