এখন পিকনিক মানেই দামি গাড়িতে ভ্রমণ কিংবা ধুমধাড়াক্কা ডিজে গানের সাথে দামি খাবার। তবে প্রচলিত এই ধারাকে পেছনে ফেলে অন্যরকম এক আয়োজন যশোরের মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঐতিহ্যবাহী সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়িতে আনন্দ ভ্রমণে মেতে ওঠেন যশোরের রুপদিয়া নার্সারি পরিবারের সদস্যরা।
গ্রামবাংলার জনপ্রিয় গানের তালে তারা ১৪টি ঘোড়ার গাড়িতে স্বপরিবারে ভ্রমণ করেন ফুলের রাজ্যখ্যাত ঝিকরগাছার গদখালী। তাদের গায়ে ও মাথায় ছিল একই ধরণের গেঞ্জি ও ক্যাপ। ব্যতিক্রমী এ আয়োজন দৃষ্টি কাড়ে এই অঞ্চলের মানুষের। রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান তাদের।
আয়োজক কমিটির প্রধান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ইকবাল হোসেন জানান, তারা প্রতি বছরই ঘোড়ার গাড়িতে করে বিভিন্ন স্থানে পিকনিকে যান। তারই অংশ হিসেবে এ বছর তারা ফুলের রাজ্যে বেড়াতে এসেছেন। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য বাংলার ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্য গরুর গাড়ি, পালকি, ঘোড়ার গাড়ি। এগুলো আসলেই বিলুপ্তির পথে। আমাদের প্রজন্ম, সন্তানরা অনেকেই এই ঐতিহ্য সম্পর্কে জানে না। আমাদের প্রজন্মকে জানানো এবং বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য আমাদের এই প্রয়াস। রুপদিয়া নার্সারি পরিবার থেকে প্রতিবছরের মতো এবছরও আমরা যশোরের আরেক ঐতিহ্য ফুলের রাজ্যে ঘোড়ার গাড়িতে বেড়াতে এসেছি।
বেড়াতে আসা সুমি খাতুন বলেন, আমরা ঘোড়ার গাড়িতে করে স্বপরিবারে বেড়াতে এসেছি। আমরা যতটুকু আনন্দ পেয়েছি, ঘোড়ার গাড়ি দেখে আশপাশের মানুষ বেশি আনন্দ পেয়েছে। অনেক মানুষ মাইক্রো, প্লেনে করে দূরে বেড়াতে যায়। আমরা সেটা না করে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ঐতিহ্য তুলে ধরতে ঘোড়ার গাড়িতে এসেছি।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক কওসার আলী বলেন, আমরা সাত বছর ধরে ঘোড়ার গাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় পিকনিক করি। এখানে আমাদের পরিবারের শিশু, নারীসহ অন্তত দুইশজন এসেছেন।
পানিসারা ফুলমোড়ের চাষি ও উদ্যোক্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, নার্সারি পরিবারের সদস্যরা এখানে আসার আগেই আমাকে জানিয়েছিল। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তারা ধরে রেখেছে এজন্য আমি খুব খুশি হয়েছি। আমাদের এই অঞ্চলে ব্যতিক্রমী এক আয়োজন দেখলো মানুষ।
উল্লেখ্য, ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের গদখালী-পানিসারা-হাড়িয়া অঞ্চলে প্রায় ১২'শ হেক্টর জমিতে ১১ধরণের ফুলের বানিজ্যিক চাষ হয়। ফুলকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই অঞ্চলে ভ্রমণে আসেন।
মন্তব্য করুন