আশুলিয়ার কাইচাবাড়ি এলাকার মাউন্ট ভিউ নার্সিং কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের ভেতরে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টার দিকে আশুলিয়ার কাইচাবাড়ি এলাকার মাউন্ট ভিউ নার্সিং কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউট এবং মাউন্ট ভিউ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভেতর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আশুলিয়ার কাইচাবাড়ি এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মো. মুসলিম (৫৫) ও একই এলাকার আলাউদ্দিন শেখের ছেলে সাইফুল শেখ (২৮)। তারা দুজনই ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মী বলে জানা গেছে।
নিহত যুবকের নাম হান্নান শেখ (৩০)। সে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। সে পাবনা সদরের ভাড়ারা মধ্যপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী শেখ সচিনের ছেলে। তিনি প্রায়ই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না বলে বের হয়ে যেতেন।
নিহত হান্নানের ভগ্নিপতি মইনুল ইসলাম লিয়াকত জানান, হান্নান শেখ প্রায়ই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতেন। এ কারণে তার স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে যায়। মানসিক ভারসাম্য হারালে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন। পরবর্তীতে অনেকেই তাকে বাড়িতে রেখে যেত। তখন তার চিকিৎসা করলে তিনি সুস্থ হয়ে যেতেন। একইভাবে গত ৭-৮ মাস আগে হান্নান শেখ ভারসাম্য হারিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে গত ২১ ফেব্রুয়ারি জানতে পারি হান্নানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি ভোরে মানসিক ভারসাম্যহীন হান্নান মাউন্ট ভিউ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভেতরে ভবনের তিন তলায় প্রবেশ করেন। পরে গ্রেপ্তাররা হান্নানকে তিন তলা থেকে নিচে নামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় হান্নান কিছু না বলে পালানোর চেষ্টা করলে চোর সন্দেহে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন মুসলিম ও সাইফুল। পরে হান্নানকে উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে নিলে কর্তব্য চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি হান্নানের মৃত্যুর খবর পায় তার পরিবার। পরে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ২২ ফেব্রুয়ারি আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিহতের ভগ্নিপতি মইনুল ইসলাম লিয়াকত। অভিযোগ দায়েরের পর শুক্রবার সকালে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মাউন্ট ভিউ নার্সিং কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের ম্যানেজার আব্দুল মালেক ফায়েক বলেন, আমি একজন আইনজীবীর চেম্বারে রয়েছি। আপনাকে পরে ফোন দেব। এ কথা বলেই তিনি মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ১নং আসামিকে ২ দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে।
মন্তব্য করুন