মাসুদ রানা, খানসামা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩, ১২:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দিনাজপুরে গরুর লাম্পি স্কিন রোগে ক্ষতির মুখে খামারিরা

এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত গরু। ছবি : কালবেলা
এলএসডি বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত গরু। ছবি : কালবেলা

দিনাজপুর খানসামা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গবাদিপশুর এলএসডি বা লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। খামার ও গৃহস্থের বাড়িতে পালিত গবাদিপশু এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় খামারি ও গরু পালনকারী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

রোগটির বর্ণনা দিয়ে উপজেলার পূর্ব বাসুলী গ্রামের খামারি ওসমান আলী বলেন, ‘আমার খামারের গরুর শরীরে হঠাৎ করে টিউমারের মতো গুটি গুটি কী যেন বের হয়েছে! এটা হওয়ার পর থেকেই খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দিয়ে শুধু ঝিম ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। পশু ডাক্তারকে দেখিয়েছি, তারা ওষুধ দিয়েছে। দেড় সপ্তাহ হয়ে গেছে। গরুর শরীরে কোনো পরিবর্তন হয়নি।’

গাভী নিয়ে একই সমস্যায় পড়েছেন একই গ্রামের গরু পালনকারী নূর ইসলাম। তার গাভী প্রতিদিন দেড় কেজি দুধ দেয়। কিন্তু ছয় দিন ধরে গাভীটির চামড়ায় ছোট ছোট টিউমারের মতো গুটি বের হয়েছে এবং যথারীতি খাওয়াদাওয়াও কমিয়ে দিয়েছে। এতে কমে গেছে দুধের পরিমাণও।

গরু চাষি জয়নাল আলীও এ ধরনের সমস্যার কথা জানিয়ে বলেন, ‘এক মাস ধরে আমার গাভীর গায়ে গুটি বের হয়েছে। ডাক্তার প্যারাসিটামল আর হিস্টাসিন বড়ি দিয়েছেন। তা-ই খাওয়াচ্ছি। তবে এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখনও সারেনি।’

জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের পল্লি চিকিৎসক জুয়েল বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রায় প্রতিদিনই লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু নিয়ে আসছেন খামারিরা। আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে সেরে উঠতে মাসখানেক সময় লাগছে। এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে ব্যথা অনুভূত হয়।’

পাকেরহাট ইজারাদার জানান, শনি ও মঙ্গলবার হাট বসে। বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে গরু-ছাগল কিনতে আসেন বেপারিরা। তবে বতর্মানে হাটে প্রচুর পরিমাণে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু আসছে। সেই গরুগুলো বাইরের বেপারিরা কিনতে চাইছেন না।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতিদিন ৬ থেকে ৭টা গরু আমাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসছে। এ সময়ে সারাদেশে কম বেশি এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গবাদিপশু। আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিচ্ছি। এ নিয়ে খামারিদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। রোগটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও সময়মতো চিকিৎসা নিলে এর প্রভাব তেমন একটা ক্ষতিকর না। এটি কম বেশি সারা বছর ছিল। কিন্তু গত এক মাসে এই রোগ বেশি দেখা যাচ্ছে। এই রোগের ভ্যাকসিন থাকলেও খামারিরা পশুকে ভ্যাকসিন দিতে তেমন একটা আগ্রহী হয় না, ফলে এই রোগটি ছড়িয়ে পড়ছে সব জায়গায়। আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করে সুস্থ গরুগুলোকে ভ্যাকসিন দিচ্ছি। আর যেসবের এলাকায় এসব রোগ আক্রান্ত হয়েছে ওই এলাকায় গরু সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত, আমরা ভ্যাকসিন দিতে পারছি না। খামারিদের কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে গোয়ালঘর পরিষ্কার রাখতে হবে, প্রতিনিয়তই জীবাণুনাশক ব্লিচিং পাউডার স্প্রে করতে হবে। মশা-মাছি আক্রান্ত করতে না পারে, এ জন্য মশারি ব্যবহার করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সন্তানকে বাঁচিয়ে প্রাণ দিলেন বাবা

সৈকতে ফের ভেসে এলো মৃত ইরাবতী ডলফিন

ইঞ্জিন সংকটে ‘নাজুক’ রেল অপারেশন

স্পেনে রিয়ালের আর্জেন্টাইন তারকাকে নিয়ে অদ্ভুত বিতর্ক

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হলেন আবু তাহের

মানবিক ড্রাইভার গড়তে নারায়ণগঞ্জে ডিসির যুগান্তকারী উদ্যোগ

গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষায় জাতীয় পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

পিএসসি সদস্য হলেন অধ্যাপক শাহীন চৌধুরী

রিয়ালের হয়ে ইতিহাস গড়লেন আর্জেন্টিনার ‘মাস্তান’

দাম্পত্য কলহ এড়ানোর সহজ ৫ উপায়

১০

‘গণতন্ত্রের জন্য আরও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হতে পারে’

১১

আর্থিক খাত নিয়ে খারাপ খবর দিলেন গভর্নর

১২

পৌরসভার ফাইল নিয়ে দুই কর্মকর্তার হাতাহাতি

১৩

কর্মস্থলে ‘অনুপস্থিত’, এবার পুলিশের ২ এসপি বরখাস্ত

১৪

এশিয়া কাপ দল নিয়ে তোপের মুখে বিসিসিআই

১৫

নারী-শিশুসহ ছয় ভারতীয় নাগরিক আটক

১৬

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার : উপদেষ্টা আসিফ

১৭

পিয়াইন নদীতে অবাধে বালু লুট, হুমকিতে বসতবাড়ি 

১৮

সোনালী ও জনতা ব্যাংকের অফিসার পদের ফল প্রকাশ

১৯

নরসিংদীতে একজনকে কুপিয়ে হত্যা

২০
X