রাত পেরোলেই কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। শনিবার (৯ মার্চ) ইভিএমের মাধ্যমে এ ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
শুধু কেন্দ্র নয়, সারা কুমিল্লাকে নিরাপত্তাবেষ্টনীতে আনার দাবি করেছেন প্রার্থীরা। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে সংঘটিত অপরাধ আমলে নেওয়া এবং সংক্ষিপ্ত বিচারকার্জ সাধনের জন্য নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে ৯ জন বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে তারা এ দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন।
নিয়োগপ্রাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠুভাবে বিচারিক কাজ পরিচালনার জন্য প্রত্যেকের সঙ্গে একজন সশস্ত্র এসআইয়ের নেতৃত্বে চারজন কনস্টেবল নিয়োগ করা হয়েছে।
আগামী ৯ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে মেয়র পদে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে মোট চারজন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে কুসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ইভিএম মেশিনে।
এদিকে প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনের ভোটের প্রচার। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণই ছিল প্রার্থীদের প্রচারের বিগত সময়গুলো।
তফসিল অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার। শনিবার নতুন মেয়র নির্বাচনে ভোট দেবেন প্রায় আড়াই লাখ নগরবাসী।
এ উপনির্বাচনে চার জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সাবেক বিএনপি নেতা নিজাম উদ্দিন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। বাকি তিন প্রার্থী হলেন তাহসীন বাহার সূচনা (বাস), মনিরুল হক সাক্কু (টেবিলঘড়ি) ও নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম (হাতি)।
তাহসীন বাহার স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। মাহমুদ তানিম মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। মনিরুল হক দুবারের সাবেক মেয়র। নিজামউদ্দিন গত নির্বাচনে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৯৯ ভোট পান।
বৃহস্পতিবার দিনভর মিছিল, মাইকিং আর স্লোগানে-স্লোগানে নগরবাসীদের কাছে যান প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকরা। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্ব স্ব মার্কায় ভোটারদের সমর্থন চান তারা।
এদিকে সাবেক মেয়র সাক্কু তার কর্মীসমর্থকদের সকল বাঁধা উপেক্ষা করে ভোটাদের স্ব স্ব কেন্দ্রে ভোট প্রদানে সক্রিয় সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়া নিশ্চিত করতে নগরীকে একরকম নিরাপত্তার চাদরের ঢেকে ফেলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা পুলিশ সুপার।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ সিটি করপোরেশনে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৮ হাজার ২৮২ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ২৪ হাজার ২৭৮ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার দুই জন রয়েছেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আমরা যা যা প্রদক্ষেপ নেওয়া দরকার নিয়েছি। প্রচার শেষ হওয়ার পর থেকে শুধু কেন্দ্র নয়, পুরো কুমিল্লাকে নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। ফল ঘোষণার পর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, কুমিল্লাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। দৃশ্যমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি থাকবেন সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরাও। কোনও বিশৃঙ্খলা হলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন