পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪, ০২:৫১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নিজ ঘরে কবর খুঁড়ে ১২ বছর মৃত্যুর অপেক্ষায় দম্পতি

নিজ ঘরে কবর খুঁড়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় শতবর্ষী দম্পতি। ছবি : কালবেলা
নিজ ঘরে কবর খুঁড়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় শতবর্ষী দম্পতি। ছবি : কালবেলা

পীরের নির্দেশে মৃত্যুর আগেই কবর তৈরি করে পাকা করেছেন ভাজন আলী-অবিরন নেছা দম্পতি। মৃত্যুর পর সেখানেই দাফন করার অসিয়ত করেছেন পরিবারের সদস্যদের। ঘরের ভেতর কবর খুঁড়ে ১২ বছর ধরে মৃত্যুর অপেক্ষায় শত বছর বয়সী এ দম্পতি। কবর খননের বিষয়টি রীতিমতো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আশপাশের এলাকার মানুষও আসছে দেখার জন্য। কী কারণে তিনি জীবিত অবস্থায় নিজের কবর খুঁড়েছেন সেটি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে জেগেছে কৌতূহল। এ দম্পতির বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভাটিয়া পাড়া গ্রামের মৃত ঈমান আলীর ছেলে মো.ভাজন আলী (১০১) ও স্ত্রী মোছা.অবিরন (৭৬)। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স ১০১ হলেও ভাজন আলীর দাবি, তার বয়স ১১৫ বছর।

পীরের নির্দেশে মো.ভাজন আলী বলেন, যুদ্ধের দুই বছর পরে বাবার মৃত্যু হয়। এর আগে তিনি কবরের জায়গা নির্ধারণ করে দেন। তিনি বলে গেছেন আমার পাশে তোমাদের দুজনের যেন কবর দেয়া হয়। মুহাম্মদ ছাইফুদ্দীন নকশাবন্দী মুজাদ্দেদী এনায়েতপুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ময়মনসিংহ শম্ভুগঞ্জি পীরের মুরিদান ভাজন আলী। তরিকার খেলাফতের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে।

ভাজন আলী বলেন, পীর বাবা বলে গেছেন কবর খুঁড়ে মাজার করে রাখতে। পরে গত বারো বছর পূর্বে স্ত্রীসহ নিজের কবর খুঁড়ে রেখেছি।

ভাজন আলীর পঞ্চগড়ে সাড়ে তিনশ মুরিদান রয়েছে তিনি নিজেকে পীর বলেও দাবি করেন। কবর খোঁড়ার পর কবরের চারপাশে পাকা করে মাজার করা হয়েছে। পাশের ঘরে নামাজ আদায় মিলাদ মাহফিলসহ বসবাস করেন।

ভাজন আলী আরও বলেন, মৃত্যুর পর আমার স্বজনরা যাতে বাড়ির পাশের খননকৃত কবরে আমাকে দাফন করে সে কথাও তাদের বলে যাচ্ছি সব সময়।

সন্তানদের বিষয়ে জানতে চাইলে মোছা.অবিরন বলেন, তাদের তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। সবার বিয়ে হয়ে অন্যত্র থাকে।

ছেলে আব্দুল জলিল বলেন, পীরের ইচ্ছায় আমার বাবা মা ঘরের ভিতর কবর খুঁড়ে রেখেছেন। শুনেছি দাদাও বলে গেছেন তার পাশে যেন তাদের কবর হয়।

সরকার পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, মৃত্যুর আগে কবর খুঁড়ে রাখার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আমিও দেখতে গিয়েছিলাম। তবে কী কারণে কবর খুঁড়ে রেখেছেন তা জানতে পারিনি।

মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ সুলতান মাহমুদ বলেন, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি সঠিক নয়।মৃত্যুর পর তার স্বজনেরা কবর খুঁড়ে দাফন-কাফন করবে এটাই বাস্তব। তবে জায়গা নির্ধারণ করে দিতে পারেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কবর তৈরির বিষয়টি রীতিমতো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু আমাদের গ্রামের নয়; বিভিন্ন এলাকার মানুষও আসছে দেখার জন্য।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কাবুল

এককভাবে সরকার গঠন করবে বিএনপি : এমরান চৌধুরী

‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে রংপুর অচল করে দিতে বাধ্য হবো’

নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না : লায়ন ফারুক

ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের পা বিচ্ছিন্ন

বৃহত্তর মিরপুরে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত ওলামা সম্মেলন অনুষ্ঠিত

দেশ বাঁচাতে হলে বিএনপির বিকল্প নেই : টুকু

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা / বস্তিবাসী ও শহীদ পরিবারের ন্যায্য দাবি মেনে নিন

মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যা

রাজধানীতে ১৭ ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জাগপা ছাত্রলীগের বৈঠক

১০

হাত-মুখ বেঁধে শিশুকে ধর্ষণ, যুবককে খুঁজছে পুলিশ

১১

এনসিটিবির নামে ‘নকল’ ছাপাখানা, আটক ৫ 

১২

পচা চাল ক্রয়, বাচ্চু মিয়াকে বাধ্যতামূলক অবসর

১৩

শহিদুল আলমসহ নৌবহর থেকে আটক ব্যক্তিদের কারাগারে বন্দি

১৪

পা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন আইসক্রিম বিক্রেতা রফিকুল

১৫

গুণগত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা তারেক রহমানের অঙ্গীকার : সাঈদ

১৬

চাকসু নির্বাচনের প্রচারে এগিয়ে ছাত্রদলের প্যানেল

১৭

জনপ্রশাসনের এপিডি এরফানুল হককে বদলি

১৮

কর্ণফুলীর তীরে নতুন আশা

১৯

চাকসু নির্বাচনে আরও তিন প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

২০
X