শুক্রবার, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১৪ ভাদ্র ১৪৩২
রিয়াদ হোসেন রুবেল, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী)
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

সাজিয়ে রাখা হয়েছে মাটির তৈরি খেলনা। ছবি : কালবেলা
সাজিয়ে রাখা হয়েছে মাটির তৈরি খেলনা। ছবি : কালবেলা

রমজান শেষেই ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ। চলছে ঈদ ও বৈশাখ উদযাপনের প্রস্তুতি। কোথাও মাসব্যাপী মেলা, আবার কোথাও চৈত্রসংক্রান্তির শুরু থেকেই হবে নানা ধরনের উৎসব। বৈশাখের এই মেলা আর ঈদ উৎসব রাঙাতে শিশুদের মনে বড় একটি জায়গা দখল করে আছে মাটির তৈরি খেলনা।

তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্প। একসময় খুব কদর ছিল রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির মৃৎশিল্পের। এখন সেখানে আর সেই জৌলুশ নেই।

বালিয়াকান্দির পাল পাড়ার স্বপন কুমার পাল, বিনয় কুমার পাল ও আকাশ পাল জানান, তারা প্রত্যেকেই মেলার জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলনা ও তৈজসপত্র তৈরি করছেন। খেলনার মধ্যে রয়েছে, মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, গণেশ পাগলসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি, পুতুল, হাতি, ঘোড়া, বানর, সিংহ, দোয়েল, কচ্ছপ, নৌকা, মাছ, হাঁস, মুরগির ডিম ইত্যাদি।

ফলের মধ্যে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, তাল ইত্যাদি। তারা জানান, আমাদের পূর্ব পুরুষরা এ পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাই আমরাও সেই ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টায় আছি। সারাবছরই আমরা মাটির জিনিস তৈরি করি। সিরামিক, প্লাস্টিক ও ধাতব তৈজসপত্রের জন্য আমাদের শিল্পে অনেকটাই ধ্বস নেমেছে। অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবুও আমরা গুটিকয়েক পাল পরিবার পুরোনো পেশা আঁকড়ে আছি। যখন কোনো মেলা বসে তখন আমরা মেলার জন্যও খেলনা তৈরি করি।

জামারপুর নলিয়া গ্রামের শুকুমার কুমার পাল জানান, বংশ পরম্পরায় ও জীবিকা নির্বাহের তাগিদে এখনও মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত আছি। দূর-দূরান্ত থেকে সংগ্রহ করা এঁটেল মাটি দিয়ে তৈরি করা পাত্রগুলোকে প্রথমে রোদে শুকিয়ে আগুনে পোড়ানো হয়। পরে শিল্পীর নিখুঁত হাতের ছোঁয়ায় রঙের তুলির আঁচড়ে ফোটানো হয় চমৎকার সব আলপনা।

তিনি বলেন, বর্তমানে ধাতব ও প্লাস্টিকের খেলনা সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় মাটির তৈরি জিনিসপত্র আজ বিলীন হতে চলেছে। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্প।

এদিকে কুমারদের দাবি, তৈরিকৃত মাটি, উপকরণ ও পোড়ানোর খরচ বেশি হওয়ায় এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে অনেক পরিবার।

ভৃড়ীমাগুরা নলিয়া গ্রামের পালপাড়ার নারী মৃৎশিল্পী আর্চয রানী পাল কালবেলাকে বলেন, একসময় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের খুব কদর ছিল। সে সময়ে চাহিদা বেশি থাকায় পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বাইরে থেকে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হতো। এখন মাটির তৈরি জিনিসপত্রের কদর অনেক কমে গেছে। বাপ-দাদা ও স্বামীর পেশা হওয়ায় সন্তানদের নিয়ে এ পেশা এখনো ধরে রেখেছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, এই উপজেলায় পাল সম্প্রদায়ের বেশ কিছু পরিবার এখনো মাটির বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করছে। মৃৎশিল্প আমাদের সংস্কৃতিরই একটা অংশ। সরকার এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাই

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লিগপর্বের ড্র অনুষ্ঠিত, রিয়াল-বার্সার প্রতিপক্ষ কারা?

সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ভিডিওটি ভুয়া

আজীবন থাকা, কাজ ও ব্যবসার সুযোগ দেবে সৌদি, কত টাকা লাগবে

ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

এবার যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের 

ফিফা কোয়ালিফায়ারে শেষবারের মতো নামছেন মেসি, জানালেন নিজেই

অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে রেখে স্বাস্থ্যকর্মীর টিকটক, অতঃপর...

গকসু নির্বাচন : রেকর্ডসংখ্যক মনোনয়ন বিতরণ 

চট্টগ্রামে হবে আইইসিসি মাল্টিডেস্টিনেশন এডুকেশন এক্সপো 

১০

চব্বিশের বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ : কাদের সিদ্দিকী

১১

ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে হামলার আশঙ্কা নিয়ে যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

১২

প্যানেলে তন্বির জন্য পদ শূন্য রাখলেও একই পদে লড়ছেন বাগছাসের এক নেতা

১৩

বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শেষ দুই ম্যাচের জন্য আর্জেন্টিনা দল ঘোষণা

১৪

আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক জোট

১৫

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ : এনামুল হক চৌধুরী

১৬

জিপিএ ৫ পেয়েও দ্বিতীয় ধাপে কলেজ পায়নি ১৪১৮ জন

১৭

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বড় রদবদল

১৮

রাজশাহীর প্রবীণ সংবাদপত্র এজেন্ট হেকমত উল্লাহ মারা গেছেন

১৯

রোডম্যাপ কার্যকরের আগে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে : খেলাফত মজলিস

২০
X