

সারাদেশে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বুধবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে দেওয়া বিবৃতিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা করে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠন ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’।
বিবৃতিতে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে ২২ দিন অতিবাহিত হলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় বুধবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা ‘তালাবদ্ধ কর্মসূচি’ ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের যৌথ আহ্বানে এ কর্মসূচি ঘোষিত হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, আজ থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। শিক্ষকরা এ সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হবেন না। নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করবেন। তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অবহিত করতে প্রথম দিন একজন করে শিক্ষক বিদ্যালয়ে গিয়ে বন্ধের বিষয়টি জানিয়ে আসবেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তিন দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার পরীক্ষা বর্জন এবং বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলবে।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের তিন দফা দাবি হল- সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে নির্ধারণ; ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতার অবসান; সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিশ্রুত যৌক্তিক দাবিসমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন করে শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে গিয়ে পরীক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় সারাদেশে একযোগে প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এ ছাড়া দাবি আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় পরিষদের আহ্বায়ক মো. আবুল কাসেম, মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ, খাইরুন নাহার লিপি ও মু. মাহবুবুর রহমানসহ ২০২৩ ও ২০২৫ ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়ার প্রতিবাদে আজ দুপুর ১২টায় দেশের প্রতিটি উপজেলা শিক্ষা অফিসের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে তা স্থগিত করা হয়েছে।
শিক্ষক নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় শাটডাউন ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হলে এক ঘণ্টার মধ্যে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দিতে তারা প্রস্তুত। তবে দাবি আদায় ছাড়া কোনোভাবেই আন্দোলন বন্ধ করা হবে না।
মন্তব্য করুন