তারাবি পড়ে ফেরার পথে ছাত্রলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার শিকার ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম জাহিদ খান ঝলক। তিনি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
সোমবার (১৯ মার্চ) রাতে উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের সলিমাবাদ মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই গ্রামের শামিনুর খানের ছেলে। ঝলক সরকারি মাওলানা মোহম্মদ আলী কলেজের অনার্স (সম্মান) ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ রাতেই ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- সলিমাবাদ গ্রামের রফিকুল ইসলামের দুই ছেলে রানা (২২), জিহাদ (১৯) ও একই গ্রামের জহের আলীর ছেলে ইমন (১৯)।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, তারাবিহ নামাজ পড়ার জন্য ঝলক বাড়ির পাশের মসজিদে যায়। পরে অর্ধেক নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথিমধ্যে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা রানা, জিহাদ ও ইমনসহ আরও ১০-১২ জন মিলে তাকে কুপিয়ে ফেলে চলে যায়।
নিহত ঝলকের ভাই পিয়াল হাসান পলক বলেন, তারাবিহ নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হলে নারী ও শিশুদের চিৎকারের শব্দ শুনতে পাই। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি আমার ভাইকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে সঙ্গাহীন অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে।
এ সময় প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল থেকে ঝলককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইসরাত জাহান ইমা বলেন, ছাত্রলীগ নেতা ঝলক হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিম হোসেন রতন এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, নিহত ঝলক উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী ছাত্র নেতা ছিলেন। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাকিরুল ইসলাম ইউলিয়াম ও সাধারণ সম্পাদক মো. কুদরত আলী জানান, এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। যারা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য দাবি জানান।
নাগরপুর থানার ওসি (তদন্ত) হাসান জাহিদ বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় নিহতের পিতা শামিনুর খান বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত রেখে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মন্তব্য করুন