সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া সদরের বিভিন্ন সড়কে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় বলে জানান স্থানীয়রা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ সড়কে যাতায়াত করা যাত্রী ও গাড়িচালকরা। কাদাযুক্ত পানি মাড়িয়ে পারাপার হতে হচ্ছে তাদের। যার ফলে ওই সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। এ ছাড়া হরহামেশাই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘনা।
জেলা শহরের সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোর অন্যতম কুমিল্লা-মিরপুর সড়ক এটি। জেলাশহর কুমিল্লায় প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে নানা প্রয়োজনে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এদের মধ্যে রোগী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রয়েছে।
সামনেই আসছে বর্ষাকাল। ঘনঘন বৃষ্টি হলে এ সড়কের অবস্থা আরও নাজুক হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তাই স্থানীয় বাসিন্দাসহ ওই সড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীরা এ জলাবদ্ধতা নিরসন ও ভাঙাচোরা সড়কের সংস্কারের দাবি জানান।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুমিল্লা-মিরপুর সড়কটি মিরপুর থেকে ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং হয়ে কুমিল্লার আঞ্চলিক সড়ক। এ পথেই মানুষ জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করে ভোগান্তিতে পড়ছে। এ ছাড়া এ সড়কের উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সামনেও জলাবদ্ধতা দেখা যায়। সড়কের অবস্থার বেহাল দশার কারণে প্রতিদিনই অটোরিকশা, সিএনজিসহ অন্যান্য গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সড়কের ওপর বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার কারণে সড়কের পিচ ঢালাই উঠে গিয়ে ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমা হলে কয়েকদিনেও তা নিষ্কাশন হচ্ছে না। যার ফলে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শংকর দেবনাথ কালবেলাকে বলেন, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই এখানে পানি জমে যায়। এতে বিভিন্ন জায়গায় গর্ত হয়ে গেছে। আজ সকালেও দুটো অটোরিকশা এখানে উল্টে যায়। এখান দিয়ে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছে। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এ সমস্যা সমাধান জরুরি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রেজাউল হক বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে টইটুম্বুর হয়ে ওঠে সড়কটি। প্রতিদিনই দুর্ঘটানা ঘটছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। সড়কের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাসহ সড়কটি সংস্কার করা জরুরি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স.ম আজহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ব্রাহ্মণপাড়া সদরের জলাবদ্ধতা অনেক দিনের ইস্যু। এর সমাধানের জন্য দরকার সমন্বিত উদ্যোগ। কেবল সরকারের দপ্তরগুলোর নয়, অবৈধভাবে ভরাট করা নিচু জমি, দখলকৃত খালসমূহকেও ব্যবস্থাপনার আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলীরা সরেজমিনে তাদের করণীয় নির্ধারণ বিষয়ক পরিদর্শন করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, ওই স্থানটির দুপাশে আগে পুকুর ছিল। পুকুরগুলো ভরাট করে বাড়ি ও মার্কেট নির্মাণের কারণে ওই স্থানের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। যার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই ওই স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও ইউএনও সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছে। সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্টরা ওই স্থান পরিদর্শন করে গেছেন। আশা করছি, আমরা শিগগিরই এর সমাধান করতে পারব।
মন্তব্য করুন