মনজু বিজয় চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রচণ্ড গরমে চা গাছে আসছে না নতুন কুঁড়ি, পুড়ছে পাতাও

তীব্র তাপমাত্রায় পুড়ে যাওয়া চা পাতা। ছবি : কালবেলা
তীব্র তাপমাত্রায় পুড়ে যাওয়া চা পাতা। ছবি : কালবেলা

মৌলভীবাজারে প্রচণ্ড গরমে চা গাছে আসছে না নতুন কুঁড়ি; কোথাও কোথাও তীব্র তাপমাত্রায় পুড়ে যাচ্ছে চা গাছের পাতা। যেখানে দু-হাত ভরে চা পাতা তুলে আনার সময়; সেখানে শ্রমিকরা বাগান নির্ধারিত পাতাই (প্রতিদিন কমপক্ষে ২৪ কেজি) জমা করতে পারছেন না। ফলে এটা তাদের ‘হাজিরা’ বা সাপ্তাহিক বেতনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

দাবদাহের এই প্রভাব লেগেছে জেলার ৯২টি চা বাগানে। এ অবস্থা থেকে চা বাগানকে রক্ষা করতে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছেন শ্রমিক ও বাগান মালিকরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সর্বোচ্চ ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত চা গাছ তাপ সহ্য করতে পারে। এর উপরে গেলেই খরায় পড়বে চা।

বিভিন্ন চা বাগানে সরজমিনে দেখা যায়, প্রচণ্ড রোদে শ্রমিকরা পাতা তুলছেন। অনেকেই ঘামে ভিজে গেছেন। তবে যেসব সেকশনে সেডটি বা ছায়া বৃক্ষ কম; সেসব সেকশনে গাছের পাতায় ধরেছে ভাঁজ। যাকে চায়ের ‘বাঞ্জি দশা’ বলা হয়।

রেড স্পাইডারের আক্রমণে গাছে ধরেছে ‘লাল রোগ’। আবার কোথাও গাছের পাতা মরে ঝরে যাচ্ছে। কোথাও চায়ের পাতায় ভাঁজ ধরে ‘বাঞ্জি দশা’য় পড়েছে; আবার কোথাও ধরেছে ‘লাল রোগ’। এতে চা উৎপাদন শুরুর মৌসুমেই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত ডিসেম্বরে প্রুনিং করা কয়েকটি সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, গাছে এখন ‘সুট’ (নতুন কুঁড়ি) আসেনি।

বাগানের শ্রমিক বাসন্তী বাউরী বলেন, বৃষ্টি না হলে এ গাছে ‘সুট’ আসবে না। যে সময় নতুন পাতায় হাত ভরে যাওয়ার কথা এই সময়ে নতুন সুটের (কুঁড়ি) জন্য ‘বাঞ্জি দশা’য় আক্রান্ত পাতা তুলে ফেলতে হচ্ছে। অন্যদিকে পাতা কম থাকায় প্রতিদিনের ২৪ কেজি পাতাও উঠাতে পারছি না।

চা শ্রমিক অলকা বালা জানান, অনেকেই ২৪ কেজির ওপরে পাতা তুলেন। উপরে ওঠালে অতিরিক্ত টাকা পান। তবে এখন ২০ কেজির উপরে কেউ পাতা উঠাতে পারেন না। প্রচণ্ড রোদে শরীরের ঘাম ঝরিয়ে এখন পাতা পান ১০ থেকে ১৫ কেজি। আর পাতা চয়নের পাশাপাশি গাছ রক্ষায় সার, পানি দেওয়াসহ তাদের করতে হচ্ছে প্রতিরক্ষামূলক কাজও।

শ্রীমঙ্গল জেরিন চা বাগানের ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা জানান, বর্তমানে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে ৩৭ ডিগ্রির উপরে চলছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে এ শিল্প।

বাংলাদেশীয় চা সংসদ সিলেট অঞ্চলের ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান গোলাম মো. শিবলী বলেন, চায়ের জন্য ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উত্তম। তবে সর্বোচ্চ ২৯ ডিগ্রি পর্যন্ত চা গাছ তাপ সহ্য করতে পারে। এর উপরে গেলেই খরায় পড়বে চা। তবে চা বাগানে সেডটির কারণে ৩৫ ডিগ্রি পর্যন্ত স্থানীয়।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. রফিকুল হক বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ; সেহেতু খরা মৌসুমের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিনই চা গবেষণা কেন্দ্রের সদস্যরা বিভিন্ন বাগান পরিদর্শন করে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এসএমসিতে চাকরির সুযোগ, আজই আবেদন করুন

সিদ্ধিরগঞ্জে বিস্ফোরণে নাতির পর নানির মৃত্যু

ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলন আজ

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

২৬ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

ডাকসু নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু আজ

তিন সহযোগীসহ ‘মাদক সম্রাট’ শাওন গ্রেপ্তার

ফের সৈকতে ভেসে এলো মৃত ইরাবতী ডলফিন

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

২৬ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

১০

পাঁচ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

১১

ক্ষমতায় গেলে এক কোটি কর্মসংস্থান করবে বিএনপি : টুকু

১২

ড. ইউনুস কি ভালো ভোট করতে পারবেন : মান্না

১৩

ষড়যন্ত্রকারীদের সতর্কবার্তা দিলেন আমিনুল হক

১৪

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু, চাচাতো চাচা রফিকুল রিমান্ডে 

১৫

জবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা মনিটরিং সিস্টেম চালু ১ সেপ্টেম্বর

১৬

স্থপতি মোশতাক আহমেদের বাবার মৃত্যুতে রাজউক চেয়ারম্যানের শোক

১৭

আফ্রিদির বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি, উকিল খুঁজছেন স্বপন

১৮

মুন্সিগঞ্জে ‘গত আগস্টে লুট করা অস্ত্র’ দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা

১৯

গরিবের স্বপ্নেই থাকে ইলিশ

২০
X