নারায়ণগঞ্জকে সবুজায়ন করতে গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন কর্মসূচির অংশ হিসেবে এক লাখ বৃক্ষরোপণের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে সাইনবোর্ড এলাকায় এক কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা এ মাইলফলকের ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত ১০ মে এ কর্মসূচির সূচনা হয়। ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি বকুল গাছ রোপণের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এরপর জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে জেলার ৫টি উপজেলা, ৩৯টি ইউনিয়ন, ৫টি পৌরসভা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে দুই মাস ধরে চলে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম। রোপণ করা হয়েছে এক লাখ গাছ, যার মধ্যে রয়েছে দেশি-বিদেশি ৪৮ প্রজাতির গাছ। ৩ হাজার দেবদারু গাছ রোপণ করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডকে পরিণত করা হয়েছে সবুজ করিডোরে।
জেলার ঐতিহাসিক ও পর্যটন এলাকা যেমন হাজীগঞ্জ দুর্গ ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরেও এ উদ্যোগ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অংশ নিয়েছেন রাজনৈতিক নেতা, ছাত্র, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও স্বেচ্ছাসেবকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন ১৫৬ সরকারি কর্মকর্তা, ১০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ৬৬০ বাগান শ্রমিক ও অন্তত ২০টি পরিবেশ সংগঠন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, শিল্পনগরী এবং ঘন জনবসতিপূর্ণ এ জেলায় মাত্র দুই মাসে ১ লাখ গাছ লাগানোর মতো স্থান বাছাই করা খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। আপনাদের সবার অংশগ্রহণে আমরা সফল হয়েছি। আমরা এমন একটি নারায়ণগঞ্জ গড়তে চাই, যেখানে নাগরিক সেবা, পরিবেশ রক্ষা এবং ঐতিহ্য একত্রে লালিত হবে। এ কর্মসূচি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে প্রথম ধাপ।
তিনি আরও বলেন, গাছ ও স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে পর্যটন, বিলুপ্তপ্রায় গাছের সংরক্ষণ, গাছের ওপর নির্ভরশীল জীববৈচিত্র্যের জীবনধারণ, পাখির খাবার ও আশ্রয়, বিশ্রাম, রাস্তা, খাল, পার্ক, পুকুর, নদী, জনসাধারণের ব্যবহৃত স্থান এবং সৌন্দর্যবৃদ্ধি, খাল-পুকুর-নদীর পাড় সুরক্ষা ইত্যাদি বিবেচনায় রেখে সম্পূর্ণ পরিকল্পনার রেখচিত্র ও কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে।
জাহিদুল ইসলাম বলেন এ পরিবেশবান্ধব, অংশগ্রহণমূলক এবং টেকসই উদ্যোগ নারায়ণগঞ্জ জেলাকে একটি বাসযোগ্য, সবুজ ও মানবিক নগরে পরিণত করার দৃঢ় অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ। এ কার্যক্রম চলমান থাকবে যতদিন না নারায়ণগঞ্জ হয়ে ওঠে প্রাচ্যের ডান্ডির প্রকৃত প্রতীক। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অধিকাংশ গাছই পাঁচ ফুট উচ্চতার ছিল। যাতে সহজে নষ্ট না হয়।
মন্তব্য করুন