শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৪, ০৮:৫৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

২০ বছরেও ভুরভুরি ছড়ায় হয়নি ব্রিজ, আর কত অপেক্ষা

ব্রিজ না হওয়ায় বর্ষার সময়ও পায়ে হেঁটে পার হতে হয় ভুরবুরি ছড়া। ছবি : কালবেলা
ব্রিজ না হওয়ায় বর্ষার সময়ও পায়ে হেঁটে পার হতে হয় ভুরবুরি ছড়া। ছবি : কালবেলা

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ৩ নম্বর সদর ইউনিয়নের রাধানগর এলাকার দুঃখ ভুরভুরি ছড়া। এ ছড়া রাধানগরকে করে রেখেছে দ্বিখণ্ডিত। অসহায় উভয়পাশে বসবাসকারী শতাধিক পরিবার ও শিক্ষার্থীরা। ২০ বছর ধরে একটি ব্রিজের আশায় বুক বেঁধে আছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

উজানের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হলে স্কুল-কলেজ যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বিপাকে পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। এ ছাড়া বিপদে পড়েন বেগুন বাড়ি এলাকার লেবু, কাঁঠাল, আনারস ও মরিচ বাগানের মালিকদের। প্রবল স্রোতে ভুরভুরি ছড়া পার হতে হয়। মাঝে মাঝে ২-৩ দিন থাকতে হয় পানিবন্দি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ১৫০ বছর আগ থেকে এখানে বসবাস করেছে বিভিন্ন ধর্মের লোক। রাধানগরের ভুরভুরি ছড়ার এক পাশে রয়েছে কয়েকটি রিসোর্ট ও কটেজ। এখানে অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য পর্যটকদেরে আকর্ষণ করে। এ দৃশ্য উপভোগ করার চেষ্টা করলেও ভুরভুরি ছড়ার কারণে তাদের আশা পূরণ হয় না।

স্থানীয়রা জানান, আমাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে গেলে সবসময় ভয়ে মধ্যে থাকি। বৃষ্টি হলে আমাদের অনেক কষ্ট হয়ে যায়। অসুস্থ হলে বয়স্ক মানুষদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। ভুরভুরি ছড়ার অপর পাড়ে রয়েছে লেবুবাগান। পাহাড়ি ঢল নামলে কয়েকদিন বাগানের লেবু নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। ফলে লেবুগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের ছাত্রী স্মৃতি দোশ বর্ষা বলেন, কলেজে যেতে পারব কিনা। আর গেলে বাড়ি ফেরা হবে কিনা। কখন নামবে পাহাড়ি ঢল, যা হয়তো আমাদের জীবন কেড়ে নিতে পারে। এ আশঙ্কা নিয়ে থাকতে সবসময়।

নকুল সাঁওতাল বলেন, পানি এসে সবকিছু ভেঙে নিয়ে যায়। এখন নিজেদের সুবিধার জন্য, বাচ্চাদের স্কুলে যাতায়াতের জন্য বাঁশের সাঁকো বানাচ্ছি আমরা।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন বলেন, এটা ব্রিটিশ আমলের ছড়া, আজকের ছড়া না। আর এ এলাকায় ১০০-১৫০ বছর আগে থেকেই মানুষ বসবাস করছেন।

প্রীতম বাহাদুর ছত্রি নামে নবম শ্রেণির ছাত্র বলেন, স্কুলে যাওয়ার সময় ছড়া পার হতে সমস্যা হয়। পার হতে গিয়ে জামাকাপড়, বই সব ভিজে যায়। যাতায়াত করতে অনেক সমস্যা হয়। বর্ষাকালে ছড়ার পানি উপরে উঠে যায়। স্কুলের পরীক্ষা দিতে যেতে পারি না, বর্ষাকালে ছড়ার পানির জন্য স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায় বলেন, রাধানগর গ্রাম থেকে দীর্ঘদিন আগে একটা দরখাস্ত এসেছিল। সেই দরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কাজ করছি। আগামী বছরের মধ্যে ব্রিজের কোনো বরাদ্দ যদি আসে, তাহলে আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ব্রিজটি করব। তখন আশা করি ব্রিজটি তৈরি হলে স্থানীয়দের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব হবে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু তালেব কালবেলাকে বলেন, আমাদের কাছে ভুরভুরি ছড়া নিয়ে দরখাস্ত দিয়ে গেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা বর্ষাকালে স্কুলে যেতে পারে না। ২০ বছর ধরে এ সমস্যা নিয়ে এলাকাবাসী দিন ধরে ছড়াটি নিয়ে এলাকাবাসীর চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে। আমি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নতুন ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শনিবার

নতুন প্রজন্ম শান্তিপূর্ণ রাজনীতি প্রত্যাশা করে : ইশরাক

ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা আজ

‘খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের আপনজন’

২০ বছরের ব্যবসা বাঁচাতে ছাড়লেন চেয়ারম্যান পদ

তাসনিম অনন্যার অনুসন্ধানে মহাবিশ্বের চাঞ্চল্যকর রহস্য উন্মোচন

২০২৬ বিশ্বকাপে কবে মুখোমুখি হতে পারে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল?

বিশ্বকাপের গ্রুপ অব ডেথে ফ্রান্স

নুরুদ্দিন অপুর হাত ধরে আ.লীগ নেতার বিএনপিতে যোগদান

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত: দেখে নিন কোন গ্রুপে কোন দল

১০

২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ যারা

১১

রাতে আবার হাসপাতালে গেলেন জুবাইদা রহমান

১২

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় ৩০টির বেশি দেশ

১৩

খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে রক্তক্ষরণ

১৪

‘বাঁধের মাটি বড় বড় খণ্ড হয়ে ঝুপঝাপ শব্দে ভেঙে পড়ে’

১৫

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

১৬

দেড় হাজার দৌড়বিদের অংশগ্রহণে হাফ ম্যারাথন

১৭

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফ্রি যাত্রীসেবা

১৮

বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

১৯

যুবদল নেতা সুমনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

২০
X